রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় রিমান্ডে থাকা এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মো. লিটন (৪০)। গত সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে থানার হাজতখানার ভেতরে তার লাশ পাওয়া যায়। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ বলছে, হাজতের ভেতর গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন লিটন।
জানা গেছে, লিটনের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার কাহালু থানার পাল্লাপাড়ায়। লিটনের নামে চারটি মাদকের মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। গত ৩১শে জুলাই ৫ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবাসহ উত্তরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১। ওইদিনই র্যাব বাদী হয়ে লিটনের বিরুদ্ধে উত্তরা-পূর্ব থানায় মাদক আইনে মামলা করে।
ওই মামলায় দুইদিনের রিমান্ডে ছিলেন লিটন।
পুলিশ জানায়, র্যাবের ওই মামলায় গত রোববার তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গত সোমবার রিমান্ডের প্রথমদিনে লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার এস আই আমিনুল ইসলাম। আসামিকে রাতের খাবারও দেয়া হয়। রাত তিনটার পর ঘুম থেকে উঠে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে লিটন।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, হাজতখানার ভেন্টিলেশন জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে আসামি লিটন। হাজতখানায় আসামির ঘুমানোর কম্বলের অংশ ছিঁড়ে গলায় ফাঁস নেন। আমরা হাজতখানার সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। লিটনের পরিবারকে খবর দিয়েছি। সেই সঙ্গে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ২০১৯ সালের ৩১শে জুলাই চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ৭ হাজার পিস ইয়াবাসহ লিটনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বগুড়ার কাহালু থানায় ২০১৮ সালের ১৭ই আগস্ট এবং ২০১৯ সালের ৬ই আগস্ট মাদক আইনে লিটনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয়।
জানা গেছে, থানা হাজতে একাই ছিলেন লিটন। তিনি ফাঁস নেয়ার পর রাত পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ জানতে পারে। হাজতের ভেতর মৃত্যুর ঘটনায় একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনসহ ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কী কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তদন্ত কমিটি সেই সুপারিশও করবে বলে জানা গেছে।