× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাবা নেই,মা চলে গেলেন ৩ মেয়ে রেখে

এক্সক্লুসিভ

পিয়াস সরকার
৩ আগস্ট ২০২১, মঙ্গলবার

এক যুগ হলো বাবা নেই। তারা তিন বোন। মাকে ঘিরেই ছিলো সব। তিন বোনের মধ্যে সুস্থ শুধু ইউসা মনি। বড় দুই বোন অসুস্থ। এবার মায়ের ছায়া থেকেও বঞ্চিত হতে হলো তাদের। মা নাসরিন বেগমের চিকিৎসার জন্য যে এম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা হয়েছিলো, সেই এম্বুলেন্সেই লাশ নিয়ে ফিরতে হলো তাকে। ইউসা মনি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের উপসর্গ ছিলো তার মায়ের। করানো হয়নি পরীক্ষা, তবে ভুগছিলেন শ্বাসকষ্টে। সোমবার রাত থেকে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ইনহেলার, নেবুলাইজার দেয়া হয়। তবুও কমছিলো না তা।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা তারা। নাসরিনের সঙ্গে আসা একজন স্বজন জানান, নাসরিনকে প্রথমে নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জের আলিফ জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে নেই অক্সিজেন। পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে। ঢাকা মেডিকেল থেকে জানানো হয় সিট খালি নাই। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও সিট না পেয়ে আনা হয় ডিএনসিসি হাসপাতালে।
তিনি আরো বলেন, নাসরিন দীর্ঘদিন বারডেমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার দুটি কিডনিতে সমস্যা ছিল। সর্বশেষ তার ফুসফুস সংক্রমিত হয়।

বেলা তখন সকাল ১১ বেজে ৫২ মিনিট। মাকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইউসা। এম্বুলেন্সেই কাতরাচ্ছেন নাসরিন। মায়ের পাশে অসহায় ইউসা। এম্বুলেন্সের দরজা খুলতেই দেখা যায় মায়ের হাত ধরে বসে আছে সে।
হাসপাতালে সিট না পেয়ে অসহায় ইউসা এম্বুলেন্সেই বসে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু মিলছে না সিট। প্রায় ২০ মিনিট কেটে যায়। মায়ের অবস্থা নাজুক হতে থাকে। কান্নাকাটি শুরু করে দেয় ইউসা। এঅবস্থায় এগিয়ে আসেন একজন চিকিৎসক। স্ট্রেচারে করে নাসরিনকে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রায়াজ রুমে। বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে ইউসা। কিছু সময় পর পর ট্রায়াজ রুমে উঁকি দেয় সে। আর সঙ্গে আসা স্বজনকে বলতে থাকে, আম্মুর কিছু হবে নাতো? আম্মু বেঁচে ফিরবে তো? আম্মু ছাড়া আমার আর কেউ নাই। কথাগুলো বলতে বলতে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে তাকে সে।

ওদিকে ট্রায়াজ রুমেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নাসরিন। মায়ের মৃত্যুর খবরে ইউসার বুকফাটা কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে থাকা প্রতিটি মানুষ স্তব্ধ। সবার চোখে তখন পানি।
কান্না করতে করতে ইউসা বলতে থাকে, শ্বাসকষ্টে অনেক কষ্ট পাইছে মা। ডাক্তারের রুমে যাওয়ার আগে আমার কাছে মাপ চেয়ে গেছে। আমারে কয়, মাপ দিস আম্মু। আম্মু কিভাবে একা থাকবে কবরে। আমারে ছাড়া আম্মু একা কবরে থাকতে পারবে না, আল্লাহ। আমার মাও নাই, আমার বাপও নাই। আমি কি নিয়ে থাকবো একলা?
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর