× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে আবার উত্তেজনা, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবেন মুহিদ্দিন!

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) আগস্ট ৪, ২০২১, বুধবার, ১:৪৪ অপরাহ্ন

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে রাজা সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতুদ্দিন তিরস্কার করার পর তার জোটের গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররা জানিয়ে দিয়েছেন, তারা আর তাকে সমর্থন করবেন না। ওদিকে পুলিশ প্রধানকে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর অফিসে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এরই মধ্যে রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এটর্নি জেনারেল। ফলে সহসাই কি ক্ষমতায় কোনো পরিবর্তন আসছে কিনা তা বলা মুশকিল। কিন্তু পরিবেশ কেমন যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ অবস্থায় আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন দাবি করেছেন, দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন তার আছে। কিন্তু জোটের সদস্যরা তার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর কিভাবে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে তা এক প্রশ্ন্রে বিষয়। এ নিয়ে করোনা মহামারির ভিতরেই দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আবার বেড়ে গেল।
২০২০ সালের মার্চে তাকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার পর থেকেই অব্যাহতভাবে চাপের মুখে আছেন মুহিদ্দিন। কারণ, তার পেরিকাতান ন্যাশনালের প্রশাসন রয়েছে ভঙ্গুর অবস্থায়। যেকোনো সময় টোকা লাগলেই তা ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারে। তিনি টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বলেছেন, মালয়েশিয়ার ২২২ সদস্যের পার্লামেন্টে এখনও তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। আগামী মাসে পার্লামেন্ট বসবে আবার। সেখানেই তার নেতৃত্বের বৈধতা পরীক্ষা হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে মুহিদ্দিন বলেছেন, সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট অধিবেশনে আমার ওপর আস্থা বিষয়ক একটি প্রস্তাব আনা হবে। এই প্রস্তাব ভোটে দেয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার অবস্থান এবং পেরিকাতান ন্যাশনালের সরকারের বিষয়ে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনের প্রতি আইন প্রণেতা বা এমপিদের সমর্থন কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আছে মালয়েশিয়া। এ সমর্থন নিয়ে রয়েছে নানা সন্দেহ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদের পদত্যাগের পর তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। গত বছর সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য তার প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন আছে। এ সময়ে ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের ওপর থেকে বেশ কয়েকবার সমর্থন প্রত্যাহার করে, অথবা প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। তখনই আনোয়ার ইব্রাহিম ওই দাবি করে বসেন। উল্লেখ্য, মুহিদ্দিন প্রশাসনে জোট সরকারে সবচেয়ে বেশি আসন আছে এই দলটির।

এখন যেহেতু তাকে তিরস্কার করেছেন রাজা এবং তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রশ্নের মুখে, তখন আস্থা ভোট আহ্বানে কেন তিনি এক মাস দেরি করবেন, তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আইনজীব, সংবিধান বিশেষজ্ঞ নিউ সিন ইয়েউ টুইটারে লিখেছেন, পার্লামেন্টে আস্থাভোটের জন্য এক মাস অপেক্ষা করা এক দায়িত্বহীন এবং স্বার্থপরের কাজ। এতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং রাজনীতির ঘোড়া ছুটবে বিভিন্ন দিকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন আহ্বান করা উচিত। মালয়েশিয়ার একেবারে নতুন রাজনৈতিক দলের অন্যতম এমইউডিএ (মুডা)। তারাও এক মাস অপেক্ষা করার চেয়ে জরুরি ভিত্তিতে পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বানের দাবি জানিয়েছে। মুডা’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাহলে তাকে এখনই পার্লামেন্টে তা প্রদর্শন করা উচিত। আমরা জানি পেরিকাতান ন্যাশনাল সরকার ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের পদত্যাগ করা উচিত।

জানুয়ারিতে রাজা সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতুদ্দিন দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর ফলে করোনা মহামারির অজুহাতে পার্লামেন্ট স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। অনেকে মনে করেন, পার্লামেন্টে রাজনৈতিক বিরোধিতায় ভয় পান মুহিদ্দিন। তাই তিনি পার্লামেন্ট থেকে দূরে থাকার জন্য জরুরি অবস্থা এবং করোনাকে ব্যবহার করছেন। তখন থেকে পরিস্থিতির বা অবস্থার শুধুই অবনতি হচ্ছে। দেশটি এখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সেখানে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার রেকর্ড ২১৯ জন মানুষ মারা গেছেন করোনায়।

মুহিদ্দিনের সর্বশেষ সঙ্কট সামনে এসে দাঁড়ায় গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করার পর। ওই সময় আকস্মিকভাবে জরুরি অবস্থা দিয়ে ফেলেন তার আইনমন্ত্রী। জরুরি অবস্থা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১লা আগস্ট। কিন্তু তা শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগেই পার্লামেন্ট আহ্বান করে এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে নাখোশ রাজা। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার অজ্ঞাতে এবং এর মধ্য দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত এসেছে মন্ত্রীপরিষদের সবার পক্ষ থেকে। মালয়েশিয়ার রাজা হলেন সাংবিধানিক রাজা। কিন্তু এ নিয়ে রাজপ্রাসাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনের বিরোধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় বিরোধী দলগুলোতে এবং একই সঙ্গে ইউএমএনওতে।

মঙ্গলবার রাতে এইএমএনও দলের প্রেসিডেন্ট আহমেদ জাহিদ হামিদিসহ কিছু সদস্য বলেন, তারা মুহিদ্দিনের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। এই দলের একজন জুনিয়র মন্ত্রী পদত্যাগও করেন। তবে দলের সিনিয়র কিছু মন্ত্রী তাদের পদে থেকে যান। এর মধ্যে আছেন ইসমাইল সাবরি। তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী এবং ইউএমএনও’র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাকে এবং আরো কয়েকজন মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর টেলিভিশন ভাষণের সময় তার পাশে দেখা গেছে।

আজ বুধবার স্থানীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এটর্নি জেনারেল। অন্যদিকে প্রশাসনিক রাজধানী বলে পরিচিত পুত্রজয়ায় প্রধানমন্ত্রীর অফিসে প্রবেশ করতে দেখা গেছে পুলিশ প্রধানকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর