একদিনে থাইল্যান্ডে রেকর্ড ২০,২০০ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছেন ১৮৮ জন। গত বছর মহামারি শুরুর পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা দুটিই রেকর্ড। এর ফলে সেখানে করোনা ভাইরাসের কারণে দেয়া বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। নতুন এই আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৭২ হাজার ৩৮৫ তে দাঁড়ালো। অন্যদিকে মোট মৃতের সংখ্যা ৫৫০৩। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছিল গত শনিবার। এ সংখ্যা ছিল ১৮৯১২।
সেদিন মৃত্যুর সংখ্যাও ছিল রেকর্ড পরিমাণ। এ সংখ্যা ছিল ১৭৮। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
শনিবারের পরেই সরকার রাজধানী ব্যাংকক এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ প্রদেশগুলোতে বিধিনিষেধ আরো কঠোর করে। আগস্টের শেষ নাগাদ এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। ডেল্টা ও আলফা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রোধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। এর মধ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি দেয়া হয়েছে। শপিংমল বন্ধ করা হয়েছে। ২৯টি প্রদেশে দেয়া হয়েছে কারফিউ। এসব প্রদেশকে ‘গাঢ় লাল জোন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ১৮ই আগস্ট এ বিষয়ে আবার পর্যালোচনা করা হবে। সরকারের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের মুখপাত্র আপিসামাই শ্রীরাঙসান বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিধিনিষেধের মেয়াদ ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। তিনি আরো বলেন, রাজধানী ব্যাংককের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রমণ দেখা দিয়েছে প্রদেশগুলোতে। ফলে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে রাখতে কঠোরতার মেয়াদ আরো বাড়ানো হবে।
গত মাসে সরকার জনগণকে বিধিনিষেধ অনুসরণ করার আহ্বান জানায়। সতর্কতা দিয়ে বলা হয়, প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজারে পৌঁছে যেতে পারে। অন্যদিকে এই বিধিনিষেধের ফলে দেশটির অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার বলেছে, তাদের ২০২১ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ১.৩ ভাগে দাঁড়াতে পারে। আগে এই প্রবৃদ্ধি শতকরা ২.৩ ভাগ বলা হয়েছিল। জুনে সেখানে গণহারে টিকা দেয়া শুরু হয়। বছরের শেষ নাগাদ তারা ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশের কমপক্ষে ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে শতকরা মাত্র ৫.৮ ভাগকে পূর্ণাঙ্গ টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে শতকরা মাত্র ২১ ভাগকে কমপক্ষে একটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে করোনার কারণে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা দেয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচার বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। জনগণ কয়েক সপ্তাহ ধরে তার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করছে।