নিয়ন্ত্রণের বাইরেই রয়ে গেছে তুরস্কের দাবানল। এতে পুড়ে যাচ্ছে গোটা একটা বন। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য ঘড়বাড়ি। তবে এখনও এই আগুনকে বসে আনতে পারছে না দেশটির দমকল বাহিনী। হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে গেছেন। দেশের এই ভয়াবহ সংকটের জন্য প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগানও। সাধারণ নাগরিকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পরতে হচ্ছে তাকে। তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও এরদোগানের নানা সমালোচনা ও নিন্দায় ভরে গেছে।
দেশটির বিরোধী নেতারা অভিযোগ তুলছেন, দাবানল মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ। প্রথমে এরদোগান একে যথেষ্ট গুরুত্ব দেননি। এখন অবস্থা সামলাতে পারছেন না।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের শহর মিলাসের মেয়র টুইট করে জানিয়েছেন, একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে চারপাশ দিয়ে আগুন ঘিরে ধরেছে। আগুন একেবারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দোরগোড়ায় এসে গেছে। আনাতলিয়ার অবস্থাও খুব খারাপ। সব মিলিয়ে দেশটির ৩০টি অঞ্চলে মোট ১৩৭টি দাবানলের ঘটনা সামনে এসেছে। এর মধ্যে অনেকগুলি নেভানো সম্ভব হলেও ১১টি বড় আগুন এখনো জ্বলছে। ফলে যে যেভাবে পারছে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। স্থানীয় পশু খামারের মালিকরা যেভাবে পারছেন নিজের পশুগুলো নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।
এরইমধ্যে নতুন আরেক সংকটে পরেছে তুরস্ক। ইস্তাম্বুলে দেখা যাচ্ছে প্রচণ্ড বিদ্যুৎ সংকট। বেশিরভাগ সময়েই বিদ্যুৎ পাচ্ছে না শহরটির বাসিন্দারা। দাবানলের কারণে পুরো তুরস্কই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই গরম থেকে বাঁচতে যাদের এসি আছে তারা সারাক্ষণ এসি ছেড়ে থাকছেন। আর এতেই সৃষ্টি হয়েছে এই সংকট। গরমে এমনকি শুকিয়ে গেছে জলাধারগুলোও। পুড়ে গেছে বনের বিশাল অংশ। যেখানে কদিন আগেও ছিল সবুজের সমারহ এখন সেখানে যতদূর চোখ যায় শুধু ছাই আর ছাই।
দাবানল কবে নেভানো সম্ভব হবে তা কর্মকর্তারা বলতে পারছেন না। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরকম দাবানল তারা জীবনে দেখেননি। কবে নেভানো যাবে কিছুই বুঝতে পারছেন না। এই বিপদের মধ্যে তুরস্কের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অনেকগুলো দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ছুটে এসেছে। তিনটি বিমান দিয়ে আগুন নেভানোর কাজে সাহায্য করছে ইইউ। রাশিয়া, ইউক্রেন, আজারবাইজান ও ইরানও সাহায্য পাঠিয়েছে। বর্তমানে মোট ১৬টি বিমান, ৫১টি হেলিকপ্টার, পাঁচ হাজার কর্মী আগুন নেভানোর কাজ করছেন।