× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সরজমিন / বিধি-নিষেধ আছে বিধি-নিষেধ নেই

দেশ বিদেশ

নূরে আলম জিকু
৫ আগস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার
ফাইল ছবি

করোনা সংক্রমণ রোধে জারি করা বিধি-নিষেধের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। বার বার বিধি-নিষেধের মেয়াদ বাড়লেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না করোনা। প্রতিদিনই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ। হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না আক্রান্তদের। কোথাও খালি নেই আইসিইউ। মিলছে না সাধারণ শয্যাও। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে ছুটছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। রোগীর চাপ বাড়ায় ভর্তি হতেও পারছেন না কেউ কেউ।
ফলে প্রতিনিয়তই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তবে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিধি-নিষেধ দিলেও মানছেন না অনেকে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। শুরুর দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের তৎপরতা ছিল লক্ষনীয়। ধীরে ধীরে কমে এসেছে তাদের তৎপরতাও। এদিকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে রাজধানীতে বিধি-নিষেধের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গণপরিবহন, শপিংমল ও বিপণীবিতান ছাড়া বাকি সবই চলছে দেদারসে। রাজধানীর সড়কে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। সড়ক, ফুটপাথ, হাটবাজার ও অলিগলিতে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। খোলা রয়েছে দোকানপাট ও খাবার হোটেল। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি। আগের মতো তেমন একটা নেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতাও। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার মানুষ ঢাকায় আসছেন। গণপরিবহন না থাকায় বিভিন্ন মাধ্যম ও হেঁটে হেঁটে রাজধানীর প্রবেশমুখ দিয়ে ঢুকছে মানুষ। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এমনটি চলতে থাকলে করোনার সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে না। বরং সংক্রমণ আরও বাড়বে। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার বেড়েছে। এতে বেশিসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। অধিকাংশ রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। মৃত্যুর সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। সরকারের দেয়া কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হলে এমনটি হতো না। শিল্প-কারখানা খোলা রেখে লকডাউনে কোনো সুফল মিলবে না। স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিতসহ বিধি-নিষেধকে আরও কড়াকড়ি করতে হবে। অনেকেই বলছেন, ঢিলেঢালা লকডাউনের সাধারণ মানুষ আর নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় থাকতে চাইছেন না। এদিকে ঈদের পর শুরু হওয়া দ্বিতীয় ধাপের কঠোর বিধি-নিষেধের ১৩তম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন্‌ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। যাত্রীবাহী গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে যানজট। অবাধে চলাচল করছে মানুষ। সর্বত্রই যেন স্বাভাবিক সময়ের ব্যস্ততা। প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে বের হচ্ছে মানুষ। হাটবাজার ও মহল্লার অলিগলিতে খোলা রয়েছে দোকানপাট। সেসব স্থানে জমায়েত হচ্ছে মানুষ। নেই স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব। অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। খাবার হোটেল ও চায়ের দোকানে ভিড় বেড়েছে। সেসব স্থানে আড্ডা আর খোশ গল্পে মেতে উঠছেন সব বয়সী মানুষ। সবখানেই ঢিলেঢালাভাবেই চলছে বিধিনিষেধ। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে রাজধানীতে মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। ঢিলেঢালা বিধি-নিষেধের মধ্যে শিল্পকারখানা খুলে দেয়ায় গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই কাজে যেতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বাড়তি ভাড়ায় রিকশা ও সিএনজিতে যাতায়াত করছেন কর্মস্থলে। ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কিছুটা নজরদারি থাকলেও শহরের ভেতরে আগের মতো কঠোর অবস্থান নেই। সরকার বারবার স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে জোর দিলেও সাধারণ মানুষ তা মানছেন না।
গতকাল সকালে মালিবাগ রেলগেট এলাকায় দেখা যায়, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার চাপ। মানুষের উপস্থিতিও বেড়েছে। খোলা রয়েছে দোকানপাট। রেলগেটের প্রতিটি দোকানে ভিড় করছে মানুষ। চায়ের দোকানে জমেছে আড্ডা। বাজারের মধ্যে প্রতিটি দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতা। মানা হচ্ছে না বিধি-নিষেধ। অনেকের মুখে নেই মাস্ক। কামরুল ইসলাম নামের এক পথচারী বলেন, শিল্পকারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। ছুটিতে যাওয়া মানুষ বিধি-নিষিধ ভঙ্গ করে ঢাকায় ফিরেছেন। এখন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বাহিরে বের হচ্ছেন। সর্বত্রই মানুষের সমাগম বেড়েছে। কোথাও কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউন বাড়লে ও মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, দেশে যে লকডাউন চলমান আছে, এতে কোনো লাভ হচ্ছে না। করোনার সংক্রমণ কমছে না। এখনো ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা রয়েছে। অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছেন। খোলা স্থানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচা- বিক্রির কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। আগে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলতো। এখন তেমন একটা দেখা যায় না।
গণপরিবহন শ্রমিক রেজাউল বলেন, সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে। ১ তারিখ থেকে গার্মেন্টকর্মীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। ঢাকার বাহির থেকে মানুষ ঠেলাঠেলি করে ঢাকায় আসছেন।
এর মধ্যে শুধু গণপরিবহন আর মার্কেট বন্ধ। আমরা অনাহারে দিন যাপন করছি। সবকিছু খোলা রেখে লকডাউন দিয়ে আমাদের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কেউ খেয়ে আর কেউ না খেয়ে দিন পার করছেন। দীর্ঘদিন বাস চালাতে না পেরে এখন অনাহারে দিনযাপন করছি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর