× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সমালোচনার মুখে মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৪ আগস্ট ২০২১, বুধবার

‘১০ই আগস্টের পর থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকরা টিকা না নিয়ে ঘরের বাইরে বের হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে’- এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তীব্র সমালোচনার মুখে গতকাল গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে এক সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছিলেন, ১০ই আগস্টের পর থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা ছাড়া চলাচল শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ফেসবুকে নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে ২৫ বছরের নিচে লোকজন টিকা রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে না সেখানে কীভাবে এধরনের ঘোষণা আসে। সরকারের হাতে যে টিকার মজুত আছে তা দিয়ে ১১ই আগস্টের মধ্যে দুই কোটির বেশি মানুষকে টিকা প্রদান করা সম্ভব না। যেখানে ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যা ১২ কোটিরও বেশি। মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ১১ই আগস্ট থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স অথচ টিকা নেয়নি এমন কেউ বাইরে বের হলেই নেয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা- সরকারের এমন সিদ্ধান্ত শুধু অযৌক্তিক, অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য নয়, এটি পুরোপুরি হাস্যকর। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকে জানায়, তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না। মঙ্গলবার রাতেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নাকচ করে দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে মঙ্গলবার যখন আ ক ম মোজাম্মেল হক এই বক্তব্য দেন, সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সেই সময় তিনি কোনো দ্বিমত প্রকাশ করেননি। মন্ত্রীর বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে পুনরায় গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘১৮ বছরের ঊর্ধ্বে কেউ বাইরে যেতে পারবে না’  বলে যে সংবাদটি প্রচার হচ্ছে তা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নয়। মূলতঃ এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোথাও দেয়া হয়নি। বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৭ থেকে ১২ই আগস্ট দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য কোভিড ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করার জন্য গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এক সপ্তাহে এক কোটি ডোজ টিকা প্রদান কার্যক্রমকে সফল করতে দেশের সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করা যায় সে ব্যাপারে সকলকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু উক্ত সভায় ‘১৮ বছরের ঊর্ধ্বের কেউ টিকা নেয়া ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না’- এ ধরনের কোনো কথা বা সিদ্ধান্ত বা কোনো রকম প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে করা হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে এই বক্তব্যটি কার তা উল্লেখ না থাকায় এ নিয়ে জনমনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কে একটি ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যা একেবারেই অনাকাক্ষিত। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চায়, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত এই সংশ্লিষ্ট সংবাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত মঙ্গলবারের বৈঠকে নেয়া হয়নি। এরকম সংবাদে মানুষের মনে সরকারের কার্যক্রম নিয়ে সংশয় যাতে দেখা না দেয় সে ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এদিকে গতকাল তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘১৮ বছরের ঊর্ধ্বে টিকা নেয়া ছাড়া কেউ বাইরে বের হতে পারবে না সরকারের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাস্ক পরার ওপর এবং সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এবং মাস্ক না পরলে যাতে শাস্তি দেয়া হয় সেজন্য পুলিশের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করা প্রয়োজন বলেও তিনি মঙ্গলবারের সভায় অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তবে বক্তব্য প্রত্যাহারের বিষয়টি মানবজমিনের কাছে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। গতকাল তিনি টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, সরকারের অনেক সিদ্ধান্তই সংশোধন হয়। টিকার বিষয়ে সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা পরবর্তীতে আমরা সংশোধন করেছি। আমরা দেখেছি, ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের ব্যাপারে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তা বাস্তবায়ন করা দুরূহ হবে। এতে অনেকের কষ্ট হবে। মন্ত্রী জানান, পরবর্তীতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তারা এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর