শাবাবের বয়স দুই অঙ্ক ছুঁয়েছে মাত্রই। ধীরে ধীরে রঙিন স্বপ্নের আঁকিবুকি ডানা মেলছে। শাবাব একদিন অনেক বড় হবে। বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করবে। করোনা কাটলে স্কুলের মাঠে ছুটে বেড়াবে বন্ধু সতীর্থদের কাঁধে হাত রেখে। কিন্তু সব স্বপ্নই থেমে গেল ডেঙ্গুর আগ্রাসি ছোবলে। বাবা-মায়ের একমাত্র বুকের ধন, সোনামানিক শাবাবকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্য, মানবজমিনের প্রাক্তন চীফ রিপোর্টার ও এটিএন নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর সারওয়ার হোসেন ও ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজের শিক্ষক সানজিদা আরার একমাত্র ছেলে শাবাব সারোয়ার। বয়স ছিল ১০ বছর।
সে রাজধানীর বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
শাবাব গত শনিবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। সোমবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎকরা মস্তিস্কে সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন। সেদিনই তাকে শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-পিআইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার শাবাবকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার জীবন রক্ষা করা যায়নি।
বুধবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে সারোয়ার দম্পতি হারিয়েছেন তাদের জীবনের অমূল্য ধন একমাত্র সন্তান শাবাবকে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল শাবাব। ভালো হয়ে যাচ্ছে এমন আশ্বাসের মধ্যেই হঠাৎ লাইফ সাপোর্টে চলে যায়। এরপর কত চেষ্টা। শাবাব আর ফিরলো না। মাত্র দশ বছরের জীবন। সোনামানিক শাবাবকে একাকি রূপগঞ্জের তারাব কবরস্থানে চিরঘুমে রেখে কি করে থাকবেন বাবা-মা! সৃষ্টিকর্তা যেন তাদের এমন শোক সইবার শক্তি দেন। তাদের শান্তনা দেবার ভাষা জানা নেই।
দু’হাত তুলে প্রার্থনা করি, হে আল্লাহ তুমি নিষ্পাপ এই শিশুটিকে জান্নাতবাসী করো। আর তাদের বাবা-মাকে কঠিন এই শোক সইবার, ধৈর্য্য ধারণের শক্তি দাও। শাবাব সারোয়ারের অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে মানবজমিন পরিবারও গভীর শোকাহত।