প্রিয় নানী,
নানী জানো- আমি বড় হয়েছি, শুধুমাত্র তোমার জন্য। আব্বু যেখানে বাড়ির নিচে যেতে দিত না ভয়ে। সেখানে করোনা হাসপাতালে গিয়ে সেবা করেছি তোমার। আব্বু কিচ্ছুটি বলেনি। উৎসাহ দিয়েছে আম্মুও।
নানী জানো, প্রথম যেদিন তোমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলো তখন আমি অনেক দূরে। তোমার অবস্থা যখন খারাপ হতে থাকলো তখন আমি অনেক কেঁদেছি। এরপর তোমাকে নিয়ে আসা হলো ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে।
তোমার সঙ্গেই প্রথম ঢোকা করোনা ইউনিটে। তোমার অসহনীয় ১১ দিনের লড়াইয়ে সামান্য পাশে থাকতে পেরে আমি অনেক তৃপ্ত। দোয়া করিও শাহাদাত নানার জন্য। নানা তোমার জন্য যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তা কোনো কিছুর বিনিময়েই মিলবার নয়। আইসিইউ- এর জন্য যখন হাহাকার করি, নিজেকে অনেক অসহায় লাগছিল। কিন্তু আল্লাহ মিলিয়ে দিলো ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। নানী আইসিইউতে তোমার ৭ দিনের লড়াইটা ছিল আমার জন্য ভয়ঙ্কর। দম বন্ধ হয়ে আসতো। চারপাশে আর্তনাদ ও প্রতিদিনই মৃত্যু দেখা আমার জন্য ছিল অসহনীয়। দাঁতে দাঁত চেপে চেষ্টা করেছি পাশে থাকার। নানী জানো, তুমি মারা যাবার আগেরদিনই ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছিল তা। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল, তুমি ফিরবে। তবুও সত্যি হলো ডাক্তারের কথা। আইসিইউ মিলবার পরেও ফিরলে না তুমি। আব্বু, আম্মু, পাপ্পা, আন্টিসহ বিশেষ করে শাহাদাত নানার অক্লান্ত পরিশ্রম বৃথা করে চলে গেলা পরপারে।
তোমার হাসিমুখের লাশটার ছবি আজও চোখে ভাসে। নানী মনে কোনো দুঃখ রেখো না। মাপ করে দিও কাছের স্বজনদের। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যারা তোমার সঙ্গে নাটক করে গেছে, যাদের জন্য তোমার ছিল শত ভাবনা। আর কিছু লিখতে পারছি না। প্রার্থনা আল্লাহ তোমাকে জান্নাতের সুশীতল ছায়ায় স্থান দিক।
ইতি তোমার
ছোট্ট বৃষ্টি