অনলাইন
এ কেমন অধঃপতন!
আয়েশা সিদ্দিকা
২০২১-০৮-১৬
ছোট বেলায় দেখেছি নারীরা অনায়েসেই স্লিভলেস ব্লাউজ পরতেন, বাসায় ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরতেন। তখন কাউকে এ বিষয় নিয়ে কোন কটূক্তি করতে শুনিনি প্রকাশ্যে অথবা আড়ালে। আজ আমরা স্লিভলেস ব্লাউজ দিয়ে শাড়ি পরে হেঁটে রাস্তা দিয়ে দুই কদম এগুলে অন্তত দশটি বাজে কথা শুনতে হবে। তখন গ্রামের ধানক্ষেতে কৃষক বধুরা ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পরে কাজ করেছেন, পুকুরে গোসল করেছেন।
আর আজকের বাস্তবতায়? চারপাশে যেদিকেই তাকাই মনে হয় মুখগুলো হায়েনার মতো তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে! কেউ সেধে উপকার করতে আসলেও মনে হয় এর নিশ্চয়ই কোন বদ মতলব আছে।
সময় যেমন একদিকে এগিয়েছে , অন্যদিকে ধর্ষণ, খুনও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। আজ আর রাস্তায় কাউকেই বিশ্বাস হয় না। পৃথিবীতে এখনও ভাল মানুষের সংখ্যা বেশি তবুও কিছু যৌন সন্ত্রাসীর কারণে নারীদের মনে এ ধরনের একটা ভীতি তৈরি হয়েছে। ধর্ষণ এখনকার বাস্তবতায় বলতে গেলে মহামারী আকার ধারণ করেছে। যতটা না ধর্ষকদের বিচারের ব্যাপারে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে তার চাইতে ধর্ষণের কারণ অনুসন্ধান করে চলছে কিছু স্বার্থপর ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও হীন পুরুষতান্ত্রিক লোক যারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। আর তাদের সে গবেষণা, অনুসন্ধানে ধর্ষণের জন্য কেবল নারীর পোশাক ছাড়া আর কিছুই বেরিয়ে আসেনা। যদিও এ যৌন সন্ত্রাস থেকে বাদ পড়ছে না হিজাবি নারী, দেড় বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধারাও। তবুও এই গোষ্ঠীটি জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে ধর্ষণের জন্য দায়ী নারীর পোশাক।
তারা পোশাকের কথাটি বলে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ লাভ করতে চায়। যাদের বিকৃত মননে মগজে নারী কেবলই যৌনতার উপকরণ মাত্র। এমন অবস্থায় প্রশ্ন চলেই আসে, ঘরের মা বোন কিংবা মেয়ে সন্তানকেও বোরকা বা হিজাব বিহীন দেখেও কি তাদের সেই আকাঙ্খাই জাগে? পুরুষতন্ত্র সে প্রশ্নে হয়তো ধেয়ে আসবে। হে কপট পুরুষ! ভাববার সময় আছে এখনও। ভবিষ্যতে নিজের কন্যা সন্তানটিকে রক্ষা করতে হলেও ধর্ষকের পক্ষে সাফাই না গেয়ে এর প্রতিকার করুন। কারণ রাস্তায় আপনার সন্তানটিও চলাচল করবে আর আপনিই তখন তাকে বলবেন, রাস্তাঘাটে বখাটে দেখে চলো।
তবে সব জেনে বুঝেও কেন এ পোশাক বির্তক বা ধর্ষণের জন্য কেন নারীর পোশাককেই দায়ী করা হচ্ছে ? প্রশ্নটা যে কোন সুস্থ মানুষেরই হতে পারে। যারা কোন যুক্তি মানবে না বলে ধরেই নিয়েছে বা যাদের টার্গেট নারীকে এবার আটকাতে হবে। যে কোন মূল্যে নারীকে আবারো পর্দার আড়ালে বন্দী করতে হবে, ধীরে ধীরে একসময় ঘরে, আবারও সে যুগে নিয়ে যেতে হবে, যে যুগ থেকে বেগম রোকেয়া নারীদের বের করে এনেছিলেন। কেননা নারীরা আজ ঘরের বাইরে বেরুচ্ছে। জগতটাকে জানছে , জানতে পারছে পুরুষতান্ত্রিকতার কথা। এতদিন যা জানত কিন্তু মেনে নিয়েছে কিন্তু এখন স্যোশাল মিডিয়ার যুগ। নারীরা ঘরে বসে তাদের অধিকারগুলোর কথা জেনে যাচ্ছে। প্রতিবাদগুলো সে দেখছে এবং সেও প্রতিবাদ করছে। ন্যায় অন্যায়গুলো মুখের সামনে অনায়াসে বলে দিচ্ছে, বলে দিচ্ছে নিজের অধিকারের কথা।
নাহ! নারীদের আর বাড়তে দেয়া চলে না। তাদেরকে বাঁধতে হবে আরো বেড়ে যাবার আগে। নিজেদের ভুলগুলো, দোষগুলো ঘরের নারীদের আর জানতে দেয়া যাবে না। তাই যখনই কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে পুরুষতন্ত্র প্রথমেই আক্রমণ করে বসে অপরাধের শিকার নারীটির পোশাককে নিয়ে। তারপর তার চলাফোরার সময় , চরিত্র এসব নিয়ে। যৌন সন্ত্রাসীরা তখন এক ধরনের স্বস্তি খোঁজে পায়, আরাম পায় এ বিতর্কে।
তারা জানে গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকড়ে বেরিয়ে আসবে অনায়াসে। অথবা তাদের ঘটিত অপরাধের দায় চাপিয়ে সেই নারীটিকে চরিত্রহীন প্রমাণ করে নিবে সমাজ। তাই আর ভাবনা কেন? ধর্ষণনটাকে তারা উপভোগের বিষয় করে নিয়েছে। আর উগ্র ধর্মান্ধ পুরুষতান্ত্রিক স্বার্থপর গোষ্ঠীটি এ ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে ব্যবহার করছে নারীর এগিয়ে যাবার পথের ঢাল হিসেবে।
কূপমণ্ডুকতা, ধর্মান্ধতা, নারীবিদ্বেষ প্রবণতা আজ আমাদের সমাজকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে। আজও আমাদের নারী সমাজের এক বৃহত্তর অংশকে সমাজের বঞ্চনা, নির্যাতন অপমান অবমাননা সহ্য করে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। নারী চোখের পানিতে পাথর গললেও পুরুষের হৃদয় পাষন্ড, পাশবিক ও নৃশংস হচ্ছে দিনকে দিন। পুরুষতন্ত্র একদিকে ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করে আর সে সুযোগে ধর্ষকরা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করছে। বেশিরভাগ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে প্রেমে প্রত্যাখান, শত্ত্রুকে ঘায়েল ও অসুস্থ যৌন আকাঙ্খা হাসিলের জন্য।
তখনকার সমাজে তবে ধর্ষণ কেন বাড়াবাড়ি ছিল না? কারণ তখন মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ছিল। তবে কি তখন নোংরা পুরুষতান্ত্রিকতাও ছিল না? ছিল। যুগ যুগ ধরেই। তবে এখনকার বাড়াবাড়িটা উগ্রতার পর্যায়ে চলে গেছে। কোন কারণে হীন মানসিকতাসম্পন্ন পুরুষেরা এখন অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে আর তাতে জ্ঞানশূন্য হয়ে তারা নারীর উপর নানাভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। কখনও ধর্মের নামে, কখনও সমাজের নামে কখনও বা নারীকে চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে। পুরুষ নিজের জন্য যা ঠিক মনে করছে তা নারীর মধ্যে দেখতে নারাজ। তাই নিজেদেরে অস্তিত্ব রক্ষায় দিনকে দিন হিংস্র হয়ে উঠছে তারা। আর সে কারণে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বৈধতা দিচ্ছে এ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কেবল নারীকে আটকাতে।
যৌন সন্ত্রাস বেড়ে যাবার কারণ একদিকে যেমন পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতা আবার অন্যদিকে এর যথোপযুক্ত বিচার না হওয়াও অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি কারণ। গ্রামাঞ্চলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার করা হয়ে থাকে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে। ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হলে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবার মতো শাস্তিগুলো দিনকে দিন উৎসাহিত করে চলছে ধর্ষকদের। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু প্রতিবাদ, সমাবেশ বা লেখালেখি হলেও সেগুলো আলোর মুখ দেখে খুব কমই। সরকারি পর্যায়ে এধরনের অপরাধ রোধে তেমন কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনা বললেই চলে।
এ ধরনের অপরাধ রোধে এগিয়ে আসতে হবে সরকারি বেসরকারি সকল পর্যায়েই। ধর্মীয় উপসানালয়গুলোতেও এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এছাড়াও স্কুল কলেজের পাঠ্য বইতেও ধর্ষণ যে একটা অপরাধ সে বিষয়ে সজাগ করে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রে সরকারী নির্দেশনার বিকল্প নেই। এসব বিষয় মানতে বাধ্য করতে হবে সরকারি পর্যায়ের আদেশের মাধ্যমে।
লেখক
আয়েশা সিদ্দিকা
নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী।
কলামিস্ট ও স্যোশাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট
আর আজকের বাস্তবতায়? চারপাশে যেদিকেই তাকাই মনে হয় মুখগুলো হায়েনার মতো তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে! কেউ সেধে উপকার করতে আসলেও মনে হয় এর নিশ্চয়ই কোন বদ মতলব আছে।
সময় যেমন একদিকে এগিয়েছে , অন্যদিকে ধর্ষণ, খুনও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। আজ আর রাস্তায় কাউকেই বিশ্বাস হয় না। পৃথিবীতে এখনও ভাল মানুষের সংখ্যা বেশি তবুও কিছু যৌন সন্ত্রাসীর কারণে নারীদের মনে এ ধরনের একটা ভীতি তৈরি হয়েছে। ধর্ষণ এখনকার বাস্তবতায় বলতে গেলে মহামারী আকার ধারণ করেছে। যতটা না ধর্ষকদের বিচারের ব্যাপারে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে তার চাইতে ধর্ষণের কারণ অনুসন্ধান করে চলছে কিছু স্বার্থপর ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও হীন পুরুষতান্ত্রিক লোক যারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। আর তাদের সে গবেষণা, অনুসন্ধানে ধর্ষণের জন্য কেবল নারীর পোশাক ছাড়া আর কিছুই বেরিয়ে আসেনা। যদিও এ যৌন সন্ত্রাস থেকে বাদ পড়ছে না হিজাবি নারী, দেড় বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধারাও। তবুও এই গোষ্ঠীটি জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে ধর্ষণের জন্য দায়ী নারীর পোশাক।
তারা পোশাকের কথাটি বলে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ লাভ করতে চায়। যাদের বিকৃত মননে মগজে নারী কেবলই যৌনতার উপকরণ মাত্র। এমন অবস্থায় প্রশ্ন চলেই আসে, ঘরের মা বোন কিংবা মেয়ে সন্তানকেও বোরকা বা হিজাব বিহীন দেখেও কি তাদের সেই আকাঙ্খাই জাগে? পুরুষতন্ত্র সে প্রশ্নে হয়তো ধেয়ে আসবে। হে কপট পুরুষ! ভাববার সময় আছে এখনও। ভবিষ্যতে নিজের কন্যা সন্তানটিকে রক্ষা করতে হলেও ধর্ষকের পক্ষে সাফাই না গেয়ে এর প্রতিকার করুন। কারণ রাস্তায় আপনার সন্তানটিও চলাচল করবে আর আপনিই তখন তাকে বলবেন, রাস্তাঘাটে বখাটে দেখে চলো।
তবে সব জেনে বুঝেও কেন এ পোশাক বির্তক বা ধর্ষণের জন্য কেন নারীর পোশাককেই দায়ী করা হচ্ছে ? প্রশ্নটা যে কোন সুস্থ মানুষেরই হতে পারে। যারা কোন যুক্তি মানবে না বলে ধরেই নিয়েছে বা যাদের টার্গেট নারীকে এবার আটকাতে হবে। যে কোন মূল্যে নারীকে আবারো পর্দার আড়ালে বন্দী করতে হবে, ধীরে ধীরে একসময় ঘরে, আবারও সে যুগে নিয়ে যেতে হবে, যে যুগ থেকে বেগম রোকেয়া নারীদের বের করে এনেছিলেন। কেননা নারীরা আজ ঘরের বাইরে বেরুচ্ছে। জগতটাকে জানছে , জানতে পারছে পুরুষতান্ত্রিকতার কথা। এতদিন যা জানত কিন্তু মেনে নিয়েছে কিন্তু এখন স্যোশাল মিডিয়ার যুগ। নারীরা ঘরে বসে তাদের অধিকারগুলোর কথা জেনে যাচ্ছে। প্রতিবাদগুলো সে দেখছে এবং সেও প্রতিবাদ করছে। ন্যায় অন্যায়গুলো মুখের সামনে অনায়াসে বলে দিচ্ছে, বলে দিচ্ছে নিজের অধিকারের কথা।
নাহ! নারীদের আর বাড়তে দেয়া চলে না। তাদেরকে বাঁধতে হবে আরো বেড়ে যাবার আগে। নিজেদের ভুলগুলো, দোষগুলো ঘরের নারীদের আর জানতে দেয়া যাবে না। তাই যখনই কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে পুরুষতন্ত্র প্রথমেই আক্রমণ করে বসে অপরাধের শিকার নারীটির পোশাককে নিয়ে। তারপর তার চলাফোরার সময় , চরিত্র এসব নিয়ে। যৌন সন্ত্রাসীরা তখন এক ধরনের স্বস্তি খোঁজে পায়, আরাম পায় এ বিতর্কে।
তারা জানে গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকড়ে বেরিয়ে আসবে অনায়াসে। অথবা তাদের ঘটিত অপরাধের দায় চাপিয়ে সেই নারীটিকে চরিত্রহীন প্রমাণ করে নিবে সমাজ। তাই আর ভাবনা কেন? ধর্ষণনটাকে তারা উপভোগের বিষয় করে নিয়েছে। আর উগ্র ধর্মান্ধ পুরুষতান্ত্রিক স্বার্থপর গোষ্ঠীটি এ ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে ব্যবহার করছে নারীর এগিয়ে যাবার পথের ঢাল হিসেবে।
কূপমণ্ডুকতা, ধর্মান্ধতা, নারীবিদ্বেষ প্রবণতা আজ আমাদের সমাজকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে। আজও আমাদের নারী সমাজের এক বৃহত্তর অংশকে সমাজের বঞ্চনা, নির্যাতন অপমান অবমাননা সহ্য করে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। নারী চোখের পানিতে পাথর গললেও পুরুষের হৃদয় পাষন্ড, পাশবিক ও নৃশংস হচ্ছে দিনকে দিন। পুরুষতন্ত্র একদিকে ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করে আর সে সুযোগে ধর্ষকরা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করছে। বেশিরভাগ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে প্রেমে প্রত্যাখান, শত্ত্রুকে ঘায়েল ও অসুস্থ যৌন আকাঙ্খা হাসিলের জন্য।
তখনকার সমাজে তবে ধর্ষণ কেন বাড়াবাড়ি ছিল না? কারণ তখন মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ছিল। তবে কি তখন নোংরা পুরুষতান্ত্রিকতাও ছিল না? ছিল। যুগ যুগ ধরেই। তবে এখনকার বাড়াবাড়িটা উগ্রতার পর্যায়ে চলে গেছে। কোন কারণে হীন মানসিকতাসম্পন্ন পুরুষেরা এখন অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে আর তাতে জ্ঞানশূন্য হয়ে তারা নারীর উপর নানাভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। কখনও ধর্মের নামে, কখনও সমাজের নামে কখনও বা নারীকে চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে। পুরুষ নিজের জন্য যা ঠিক মনে করছে তা নারীর মধ্যে দেখতে নারাজ। তাই নিজেদেরে অস্তিত্ব রক্ষায় দিনকে দিন হিংস্র হয়ে উঠছে তারা। আর সে কারণে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বৈধতা দিচ্ছে এ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কেবল নারীকে আটকাতে।
যৌন সন্ত্রাস বেড়ে যাবার কারণ একদিকে যেমন পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতা আবার অন্যদিকে এর যথোপযুক্ত বিচার না হওয়াও অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি কারণ। গ্রামাঞ্চলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার করা হয়ে থাকে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে। ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হলে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবার মতো শাস্তিগুলো দিনকে দিন উৎসাহিত করে চলছে ধর্ষকদের। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু প্রতিবাদ, সমাবেশ বা লেখালেখি হলেও সেগুলো আলোর মুখ দেখে খুব কমই। সরকারি পর্যায়ে এধরনের অপরাধ রোধে তেমন কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনা বললেই চলে।
এ ধরনের অপরাধ রোধে এগিয়ে আসতে হবে সরকারি বেসরকারি সকল পর্যায়েই। ধর্মীয় উপসানালয়গুলোতেও এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এছাড়াও স্কুল কলেজের পাঠ্য বইতেও ধর্ষণ যে একটা অপরাধ সে বিষয়ে সজাগ করে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রে সরকারী নির্দেশনার বিকল্প নেই। এসব বিষয় মানতে বাধ্য করতে হবে সরকারি পর্যায়ের আদেশের মাধ্যমে।
লেখক
আয়েশা সিদ্দিকা
নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী।
কলামিস্ট ও স্যোশাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট