টাঙ্গাইলের সখীপুরে ১২ ফুট লোহার শিকলে ১২ বছর ধরে বাঁধা মানসিক প্রতিবন্ধী শহিদুল ইসলাম (৩৫)-এর জীবন। দিনের বেলায় বাড়িতে গাছের সঙ্গে আর রাতের বেলায় ঘরে এক চৌকির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তাকে। এ ঘটনা উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের মহানন্দনপুর গ্রামে। সে ওই এলাকার মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে। শহিদুলের বৃদ্ধা মা কাজুলি বেগম জানান, ৩ ছেলের মধ্যে শহিদুল সবার ছোট। মেজ ছেলে কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। জন্মের কয়েক বছর পর থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধীর মতো আচরণ করে শহিদুল। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ও কবিরাজ দিয়ে তাকে অনেক চিকিৎসা করানো হয়।
কিন্তু ক্রমেই তার মানসিক প্রতিবন্ধিতা বেড়ে যায়। সুযোগ পেলেই এদিক- সেদিক চলে যেত। অনেক খোঁজাখুঁজি করে ফিরিয়ে আনা হতো। এক পর্যায়ে আর কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে একটি শিকল পরিয়ে ওকে আটক করে রাখি। তিনি আরও জানান, শহিদুলের বাবা ৫ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। অভাবের সংসারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনের উৎস। মারা যাওয়ার পর মানুষের সহযোগিতায় কোনোমতে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। শহিদুলকে নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছি। মায়ের হাতের খাবার ছাড়া কোনো খাবার খায় না শহিদুল। স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন বলেন, তাকে একটি ভাতা কার্ড করে দেয়া হয়েছে। প্রতিমাসে ৭৫০ টাকা পান শহিদুল। সেই টাকা দিয়েই কোনোমতে তার খাবারের ব্যবস্থা করে মা-ছেলে। প্রতিবেশী এবং ওয়ার্ড় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, শহিদুল ও তার মা একসঙ্গে থাকে। তারা খুবই অসহায়। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসাও হয়নি। উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে উঠতো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী বলেন, শহিদুলের শিকলবন্দি জীবনের কথা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।