× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঢাকা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চোখ জুড়ানো বঙ্গবন্ধু গ্যালারি

এক্সক্লুসিভ

জাবেদ রহিম বিজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার

ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই কিছুক্ষণের জন্য চোখ আটকাবে যে কারও। দেয়ালে সুন্দর কারুকাজ আর পরিপাটি করে সাজানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কিছু ছবি। সেই সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে তার অমর কয়েকটি বাণী। সবারই নজর কাড়ছে এসব। এ চিত্র ঢাকার রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের বঙ্গবন্ধু গ্যালারির।
মূলত রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের সেবাগ্রহীতারা যেন জাতির জনক সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারেন এবং তাঁর আদর্শ লালনে উদ্বুদ্ধ হন- সেই চিন্তা থেকে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু ছবি ও অমর বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে গ্যালারিটি। এই গ্যালারির উদ্যোক্তা ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। অনন্য এই কাজ বাস্তবায়নে তাকে সহযোগিতা করেন গুলশানের সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খান।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের ২নং ভবনের সামনের অংশে স্থাপন করা বঙ্গবন্ধু গ্যালারিটি গত ১৫ই আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক উদ্বোধন করেন।
এরপর সেটি কমপ্লেক্সে আগতদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা মানুষজন চোখ জুড়ানো বঙ্গবন্ধু গ্যালারি দেখে পুলকিত ও আন্দোলিত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র গ্যালারি দেখার জন্যও আসছেন কমেপ্লক্সে।
জায়গার দলিল করতে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আসা গুলশানের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, কমপ্লেক্সে এতো মানুষের জটলার ভিড়ে জাতির জনকের গ্যালারিটি দেখে অনেক ভালো লেগেছে তার। বঙ্গবন্ধুর বেশকিছু দুর্লভ ছবি রয়েছে গ্যালারিতে। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শ সম্পর্কে জানাতে এই গ্যালারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু গ্যালারি দেখতে আসা ঢাকার মুগদা এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বাচ্চু বলেন- বঙ্গবন্ধুকে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে গ্যালারিতে। প্রতিটি ছবিই যেন জীবন্ত! রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনায় স্বাধীন বাংলাদেশের জনকের এই গ্যালারির মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর জীবনাদর্শ সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বলেন- বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত আমাদের অফিসে প্রচুর মানুষ আসেন তাদের কাজের প্রয়োজনে। তারা যেন বঙ্গবন্ধুকে জানতে পারেন, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। এই গ্যালারি বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা, ভাবনাগুলো তাদের মনে করিয়ে দেবে। জনগণকে সেবা করবো এটাই মটো আমার। সে কারণে এখানে বঙ্গবন্ধুর একটি বাণী আমরা দিয়েছি-‘সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে, তারা জনগণের খাদেম, সেবক, ভাই। তারা জনগণের বাপ, জনগণের ছেলে, জনগণের সন্তান। তাদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’ এটি যাতে আমাদের ভাবনায় থাকে সে কারণে আমরা এই বাণীটি এখানে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, এই কাজ সম্পন্ন করতে স্যার (আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ) আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন। সেজন্যে আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমার অধীনস্থ কর্মকর্তারাও আমাকে সহায়তা করেছেন। তাদের অন্যতম গুলশানের সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খান।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সাবিকুন নাহার রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের চিরচেনা দৃশ্যের পরিবর্তন ঘটাতে কাজ শুরু করেন। কমপ্লেক্স আঙ্গিনা হয়ে উঠেছিল গাড়ি পার্কিংয়ের স্থল। বহিরাগতরা এখানে গাড়ি পার্কিং করতো অবাধে। এতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, সেবাগ্রহীতাদের চলাচলই কঠিন হয়ে পড়ে। সেই অবস্থা এখন নেই। আঙ্গিনা উন্মুক্ত। দেয়ালের পাশে করা হয়েছে বাগান। বাইরের এই পরিবর্তনের পাশাপাশি তিনি অফিসের চেহারা পাল্টাতেও ভূমিকা রাখেন। এখানে যোগদানের পর ১০০ দিনের কর্মসূচি হাতে নেন। যার অন্যতম ছিল যথা সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা। সেটি করেছেন তিনি। রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সকে দালাল তথা অপরাধমুক্ত করার কাজেও সফল হয়েছেন। ব্যাংকিং সুবিধা চালু করা হয় কমপ্লেক্সে। অসুস্থদের সেবা নিতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্যে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেন। নিয়োগ, বদলি- পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়ম দূর করার দাবিদারও তিনি। জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বলেন- দায়িত্ব নেয়ার পরই সহকর্মীদের নিয়ে বসে এখানে কোথায় কি সমস্যা তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করি। ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পর আমি নিজে সকাল ৯ টায় অফিসে হাজির হই। যাতে আমার অফিসের সবাই সেটা ফলো করে। মোট কথা হচ্ছে জনগণ যাতে সেবা বঞ্চিত না হয় আমি সেটি নিশ্চিত করতে বলা চলে জিহাদ ঘোষণা করি। সপ্তাহের বুধবার গণশুনানির জন্য নির্ধারিত থাকলেও আমি প্রতিদিনই গণশুনানি করছি। আমার দরজা সবার জন্য খোলা। বদলি-নিয়োগ শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি। সাব- রেজিস্ট্রার হিসেবে ১৯৯৪ সালে সাবিকুন নাহারের কর্মজীবন শুরু হয়। ২০১৬ সালে জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপরই নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পান। ঢাকা রেজিস্ট্রার হিসেবে কমপ্লেক্সে থাকা ঢাকা শহরের ১১টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং এর বাইরে জেলার আরও ১০টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস রয়েছে তার অধীনে। সবক’টি অফিসে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন তিনি। কমপ্লেক্সে থাকা গুলশান সাব-রেজিস্ট্র্রি অফিস হয়ে উঠেছে তারই আয়না। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে এখানে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আরেক দক্ষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রমজান খান। এরপরই সাব-রেজিস্ট্র্রি অফিসের কাজকর্মে পরিবর্তন আসে। সেবাগ্রহীতারা যাতে কোনোরকম হয়রানির শিকার না হন সেই পদক্ষেপ নেন তিনি। রেজিস্ট্র্রি অফিসের প্রবেশ মুখে একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেন সেবাগ্রহীতাদের উদ্দেশে। যাতে লিখা রয়েছে- ‘যে কোনো প্রয়োজনে সাব- রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন’। মোহাম্মদ রমজান খান বলেন, হয়রানি মুক্ত সেবা নিশ্চিত করেছেন তিনি। আগে এখানে সেবাগ্রহীতাদের বসার জায়গা ছিল না। সেই ব্যবস্থাও আমি করেছি।
এদিকে ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, গুলশান ও সাভারে ই-রেজিস্ট্রেশনের ২ মাসের একটি সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এরই মধ্যে। সাবিকুন নাহার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার রানীখার গ্রামের পুত্রবধূ। তার স্বামী সৈয়দ আলমগীর হোসেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর