দেশ বিদেশ

খুলনায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

২০২১-০৯-১৪

খুলনার ৩৪টি ইউনিয়নে ক্রমেই বাড়ছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনী উত্তাপ। এরই মাঝে দফায় দফায় ঘটছে সংঘর্ষ ও সহিংসতা। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন ভোটাররা। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ ও আইনশৃ্‌ঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবশেষ রোববার খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটীতে নির্বাচনী সহিংসতায় দু’পক্ষের ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানায়, ওইদিন দুপুর ১টার দিকে সেনহাটী পুলিশ ক্যাম্পের সামনে সেনহাটী ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারহানা হালিমের এক সমর্থকের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া গাজীর সমর্থকের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর জিয়া গাজী তার সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সেখানে আসেন। এ সময় চন্দনীমহলের স্টার জুট মিলের ২নং গেট থেকে মোটরসাইকেলযোগে ফারহানা হালিমের সমর্থকরা এসে সেনহাটী পুলিশ ফাঁড়ির সামনে জিয়া গাজীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তারা দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
অপর একটি সূত্র জানায়, দুপুরে দৌলতপুর থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে বরইতলা নামক স্থানে পৌঁছালে সেনহাটী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া গাজীর সমর্থক ফিরোজ আহমেদকে ফারহানা হালিমের লোকজন মারধর করে। এর পরপরই সেনহাটী পুলিশ ক্যাম্পের সামনে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া গাজীর একাধিক গণসংযোগে হামলা ও দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ গণসংযোগে থাকা নেতা-কর্মীদের মারধর করে। এক পর্যায়ে জিয়া গাজীর সমর্থকরা প্রতিরোধ হিসেবে তাদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মনিরুল গাজীর লোকজন স্টার জুট মিল ২নং গেটে জিয়া গাজীর সমর্থক মনসুর ও জামালের চায়ের দোকান এবং নজরুলের বাড়ি ভাঙচুর করে। আর সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফারহানা হালিমের বড় ছেলে নিলয় চন্দনীমহল বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া গাজীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এ নিয়ে এলাকায় দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে বটিয়াঘাটার আমিরপুর ইউনিয়নের সৈয়দের মোড়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় ১৫/২০ জন আহত হন।
একই দিন সন্ধ্যায় কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নৌকা প্রতীকের পোস্টার টাঙানো ও প্রচারণার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী আছের আলী মোড়লের নির্দেশে তার লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে প্রচার মাইক ভাঙচুর করতে থাকে। নৌকার কর্মীরা এতে বাধা দিলে তাদের মারপিট করা হয়। আহত হন ৮ জন। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সংবাদ সম্মেলন করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামসুর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান মিলন। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ করা হবে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ১৫৬ জন। তাদের মধ্যে দাকোপের লাউডোব ইউনিয়নে শেখ যুবরাজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া কয়রা উপজেলার ৫ নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে শেখ সোহরাব আলী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। ৩৪টি ইউনিয়নে
খুলনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলাম বলেন, জেলার ৩৪টি ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বর্তমানে রিটার্নিং অফিসার, প্রিজিাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সামপ্রতিক সময়ে কয়েকটি জায়গায় প্রার্থীদের মধ্যে হামলা মারামারির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। শুধু দিঘলিয়ার যোগীপোল ইউনিয়ন থেকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status