আবারও বড় ধাক্কা খেলো আফ্রিকার বৃহত্তর সাহারা অঞ্চলের জিহাদিরা। ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা ওই অঞ্চলের ইসলামিক স্টেটের প্রধান আদনান আবু ওয়ালিদ আল-সাহরায়িকে হত্যা করেছে। মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোর সীমান্ত যেখানে মিশেছে সেখানেই অভিযান চালায় ফরাসি সেনারা। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক টুইটে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন জানান, ওই অভিযানেই হত্যা করা হয়েছে আল-সাহরায়িকে। একে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বড় সফলতা বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। তবে অভিযানের কোনো বিস্তারিত তথ্য তিনি টুইটে উল্লেখ করেননি।
এখনও জিহাদি সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাদের নেতার নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়নি। আলাদা একটি টুইটে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লি জানিয়েছেন, ফ্রান্সের বারখেন বাহিনীর হাতেই নিহত হয়েছেন আল-সাহরায়ি।
৫ হাজার ১০০ সদস্যের এই বাহিনীটি গত ৮ বছর ধরে আফ্রিকার ওই অঞ্চলে মোতায়েন রেখেছে ফ্রান্স। এটিকে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য বড় আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেন ফ্লোরেন্স। বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ চলবে।
২০২০ সালে ফরাসি ত্রানকর্মীদের হত্যা করেছিল ইসলামিক স্টেটের জিহাদিরা। এছাড়া ২০১৭ সালে নাইজারে মার্কিন সেনাদের টার্গেট করে হামলা করেছিল তারাই। গ্রেটার সাহারা বা বৃহত্তর সাহারা অঞ্চলে সক্রিয় জিহাদি গোষ্ঠিটির পুরো নাম ইসলামিক স্টেট অব গ্রেটার সাহারা বা আইএসজিএস। ২০১৫ সালে আল-সাহরায়ি এই জঙ্গি সংগঠনটি গড়ে তুলেছিলেন। মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে সামরিক ও বেসামরিক মানুষের ওপর অনেকগুলো ভয়াবহ হামলার জন্য দায়ি করা হয় আইএসজিএস-কে।
সাহারা অঞ্চলে আইএসজিএস এবং আল-কায়দা সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর হামলা সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ দমনে কাজ করে যাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। আল-সাহরায়ির অবস্থান সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৭ সাল থেকেই তিনি মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের তালিকায় ছিলেন। ২০২০ সালে আল-সাহরায়ি নিজেই ৬ ফরাসি ত্রাণকর্মীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হত্যা করা হয়েছিল তাদের আফ্রিকান গার্ডদেরও। ২০১৯ সালজুড়ে মালি ও নাইজারে তাণ্ডব চালায় আইএসজিএস। এর আগেও জিহাদি গোষ্ঠিটির একাধিক উচ্চপদস্থ সদস্যকে হত্যা করেছে ফরাসি বাহিনী।