আজ বিশ্বকর্মা পুজো। স্বর্গের ইঞ্জিনিয়ারের আরাধনায় এদিন মত্ত হয় মর্ত্যবাসী। গনেশ চতুর্থীর রমরমার আগে এই বিশ্বকর্মা পুজোই ছিল বাঙালির উৎসবের মৌসুম শুরু হওয়ার দ্যোতক। আকাশে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সকাল থেকেই উড়তো পেটকাটা চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী, পক্ষীরাজ, ঘরিয়াল, ঢাউস কত ঘুড়ি। করোনায় গত দেড় বছরে ভো কাট্টা হয়ে গেছে ঘুড়ি। শুক্রবার সকালে কলকাতার আকাশ নির্মেঘ। কিন্তু কোথায় ঘুড়ি? ছাদে ছাদে লাটাই হাতে উৎসাহীদের ভিড় কই? কোথায় সেই মাঝ আকাশে ঘুড়ির প্যাঁচ আর মাঝে মাঝেই ভো কাট্টা আওয়াজ। মাঞ্জা দেওয়া নিয়ে আগের রাতে প্রস্তুতিই বা কোথায় গেল? সারারাত ধরে গদের আঠা, কাঁচের গুঁড়ো আর সুতো নিয়ে মাঞ্জা দেওয়ার জন্যে হাড়হিম করা পরিশ্রম! এখন রেডিমেড চীনা মাঞ্জা এসে গেছে।
তা যত না কাটছে ঘুড়ি তার থেকে বেশি কাটছে ফ্লাইওভারে মানুষের গলা। তিন পুরুষ ধরে ঘুড়ি আর মাঞ্জার ব্যবসা করেন পার্ক সার্কাস এর রশিদ জান। জানালেন এমন মন্দা তিনি কস্মিনকালেও দেখেননি। বিশ্বকর্মা পুজোয় হাতে গোনা দু একটা ঘুড়ি আকাশে উড়বে তা তিনি কখনও কল্পনাতেও ভাবেননি বলে জানালেন। আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে ঘুড়ি উৎসব হত। নানারকমের ঘুড়ি নিয়ে আসতেন ঘুড়ি উৎসাহীরা। দুবছর তাও বন্ধ। সব মিলিয়ে এই করোনা আবহে আজ বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে কলকাতার আকাশ বড় নিস্প্রান। করোনা যেন কেড়ে নিয়েছে ঘুড়ির বাতাস।