রিও অলিম্পিকে চারটি সোনা জিতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন সিমোন বাইলস। টোকিও অলিম্পিকেও এই জিমন্যাস্টকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তবে মানসিক অবসাদের কারণ দেখিয়ে অনেকগুলো ইভেন্ট থেকে নাম সরিয়ে নেন বাইলস। অবশেষে নিজের মানসিক অশান্তির কারণ জানালেন তিনি। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার নেপথ্যে যৌন হয়রানির ঘটনাকে উল্লেখ করেছেন এই আমেরিকান অ্যাথলেট।
তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মহিলা জিমন্যাস্টদের সাবেক ডাক্তার ল্যারি ন্যাসারের ওপর যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন বাইলস। এ নিয়ে মামলাও করা হয়। সেই মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুরো সিস্টেমকেই দুষলেন বাইলস।
সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির সামনে বাইলস বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে ল্যারি ন্যাসারকে যেমন আমি দোষ দিচ্ছি, একইভাবে দোষ দিচ্ছি আমাদের গোটা ব্যবস্থাটাকে।
তার জন্যই ন্যাসার দিনের পর দিন এই কুকর্ম করে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।’
সর্বপ্রথম ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ন্যাসারের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু প্রায় এক বছর পর ২০১৬ সালে তদন্ত শুরু করে এফবিআই। এই সময়ের মধ্যে আরও ৭০ জন তরুণীকে হেনস্তা করেন ন্যাসার।
বাইলস বলেন, ‘আমাদের জিমন্যাস্টিক্স এবং অলিম্পিকস, প্যারালিম্পিকস সংস্থা নিজেদের কাজ ঠিকমতো করেনি। এফবিআই (তদন্ত সংস্থা) অন্ধের মতো বসেছিল। তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করলে এতদিন ধরে একই অপরাধ ঘটতো না।’
নারী এলিট পর্যায়ের জিমন্যাস্টদের মধ্যে প্রথম ন্যাসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনিছেন ম্যাগি নিকোলাস নামের এক অ্যাথলেট। তিনি বলেন, ‘আমি যখন এফবিআইকে অভিযোগ করলাম তখনও ন্যাসার তার যৌন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছিলো।’
ইংলিশ দৈনিক সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দুইশত নারীকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছিল ল্যারি ন্যাসারের বিরুদ্ধে। বর্তমানে এই চিকিৎসক ১৭৫ বছরের কারাদ- ভোগ করছেন।
২০১৮ সালের ১৫ই জানুয়ারি সর্বপ্রথম যৌন নিপীড়িত হওয়ার ঘটনা সামনে আনেন বাইলস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাইলস বলেছিলেন, ‘অধিকাংশরাই আমাকে চেনে হাসিখুশি, চনমনে স্বভাবের একটি মেয়ে হিসেবে। এই ঘটনার পর একদম ভেঙে পড়েছিলাম আমি। সেই অভিজ্ঞতার যন্ত্রণা চেপে রাখার চেষ্টা করলে ভয় আরও বাড়তো। আমার সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে এখন আর ভয় করে না আমার। অন্য অনেক অ্যাথলেটের মতো আমিও টিমের চিকিৎসক ল্যারি ন্যাসার কর্তৃক যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এতদিন ওই ঘটনা না জানানোর অনেক কারণ ছিল। ’