× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভেজাল ধান বীজে কৃষকের সর্বনাশ

বাংলারজমিন

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, শনিবার

ভেজাল  ও নিম্ন মানের ধান বীজ দিয়ে চাষ করায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার কয়েক ইউনিয়নের অর্ধশত কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ৬ মাসে ধানের চারায় ফুল আসার কথা থাকলেও ২ মাসের মধ্যে গাছে অপরিপক্ক ও চিটা ধান আসায় কৃষকরা এই ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। শ্রীমঙ্গল শহরের পোস্ট অফিস রোডের বীজ ডিলার মেসার্স হাজী সীড হাউসে ২০-২৫ জন ভুক্তভোগী কৃষক জড়ো হলে বীজ ডিলার আবু তাহের সুমন গা ঢাকা দেয়। এ সময় কৃষকরা বীজ ডিলারের প্রতারণার বিচার চেয়ে দোকানের সামনে হট্টগোল করেন।
উপজেলার আশিদ্রোন ইউপির শংকরসেনা গ্রামের কৃষক সঞ্জিদ দেবনাথ (৪২) বলেন,  ‘তার ৮ কেয়ার জমির জন্য ডিলার থেকে  সুভলতা জাতের ১০ কেজি ওজনের ৬ ব্যাগ ধান বীজ কিনে বীজতলা করে চারা রোপণ করেন। ৫-৬ মাস পর ধানের চারায় ফুল ও ধান হওয়ার কথা। কিন্তু ২ মাসের মধ্যে চারা গাছে ফুল আসে। এই ফুল থেকে চিটা বের হওয়ার পর মরে যেতে থাকে’।
তিনি বলেন, ‘৪৫ হাজার টাকা খরচ করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে এবার জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এখন তো পথে বসার উপক্রম হয়েছে’। ক্ষতিগস্ত কৃষকরা অভিযোগ করেন, উপজেলার প্রায় অর্ধশত কৃষক গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডিলারের কাছ থেকে ৬ মাস মেয়াদি উচ্চ ফলনশীল সুভলতা জাতের ধানের বীজ ক্রয় করেন।  প্রতি কেজি বীজের দাম নেয়া হয় ৪৬ টাকা। বীজতলা থেকে চারা রোপণ করার পর অসময়ে অপরিপক্ক ফুল আসায় তারা শঙ্কায় পড়ে যান। এ নিয়ে ডিলারের কাছে পরামর্শের জন্য এলে ডিলার বেশি করে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পরামর্শ দেন। ডিলারের পরামর্শে জমিতে ইউরিয়া ছিটানোর পর ফুল চিটার রূপ ধারণ করে আস্তে আস্তে মরে কালো হয়ে যেতে থাকে। কৃষকরা স্থানীয় লোকজনদের বিষয়টি জানালে তারা বীজের ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখেন ব্যাগের গায়ে ধান বীজ জাতের জায়গায় কোথাও সুভলতা লেখা নেই। ধান বীজ জাতের জায়গায় নতুন করে সাদা রং করে ‘স্বর্ণা-৫’ লেখা। এই সাদা রং উঠিয়ে দেখা গেছে সেখানে ‘ব্রি ৪৮ ধান’ লেখা অঙ্কিত। ব্যাগের গায়ে ‘এম আর সীড বীজ কো. প্রা. লি. মেহেরপুর’ লেখা থাকলেও বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়া, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখ এবং বিএসটিআইয়ের কোনো সিল ছিল না। এ নিয়ে প্রতারিত কৃষকরা কয়েক দফা ডিলারের স্মরণাপন্ন হলেও ডিলার তাদের ‘ভুল ভাল’ বুঝিয়ে বিদায় করে দিয়েছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করেন।
ডিলারের ম্যানেজার জিয়া জানান, মালিক মামলা সংক্রান্ত কাজে মৌলভীবাজার কোর্টে গেছেন। তিনি বলেন, গত মে মাসে রাজশাহীর একটি সীড হাউস থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের কন্ডিশনে এর মাধ্যমে এই ধান বীজ সংগ্রহ করেছে। রাজশাহীর সেই সীড হাউসের নাম ও বীজ কেনার রশিদ দেখতে চাইলে জিয়া জানান, এটা মালিকের কাছে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোনালিসা সুইটি জানান, উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন ও ভূনবীর ইউনিয়ন থেকে বেশকিছু অভিযোগ এসেছে। ভেজাল ও নিম্ন মানের বীজ সরবরাহ করে কৃষকদের এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়টি শক্তভাবে দেখা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলো সরজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর