× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সীমান্তে সক্রিয় ইয়াবা চোরাচালানকারীরা

শেষের পাতা

আল-আমিন
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, শনিবার

সীমান্তে ইয়াবা চোরাচালান চক্রের সদস্যরা সক্রিয়। বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর জন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গড়ে তুলেছে তারা  ছোট ছোট ইয়াবার কারখানা। এই চক্রের সদস্যরা ওই এলাকাগুলোতে রপ্তানিকারক কেউ খুচরা পণ্যের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে এই কারবার করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এমন ৪৬টি চক্র কাজ ভারত ও মিয়ানমারের দুই দেশের সীমান্তে ১৫৫টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রকে দমাতে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কাজ করছে। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি আগের চেয়ে আরও বেশি সক্রিয় রয়েছে। তারা ইয়াবা কারবারিদের ধরতে টহল বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি ২০২০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি ও বিএসএফ’র সম্মেলনে ইয়াবাসহ মাদকের কারবারের বিষয়টি উঠে আসে।
বিশেষ করে ইয়াবা চোরাচালানের পরিসংখ্যানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সম্মেলনে এ নিয়ে তাৎক্ষণিক  গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সভায় দুই দেশ ইয়াবা চোরাকারবারিদের নামের তালিকা বিনিময় করে।  
এ বিষয়ে বিজিবি’র পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান গতকাল মানবজমিনকে জানান, ‘সীমান্তে ইয়াবাসহ মাদক চোরাচালান দমনে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি কাজ করছে। অনেক ইয়াবা কারবারি ধরা পড়ার পাশাপাশি আহতও হচ্ছে। সীমান্তে মাদক চোরাচালান শূন্যের কোঠায় আনতে আমরা কাজ করছি।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৮ পিস, ২০১৯ সালে ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ১২০ পিস, ২০২০ সালে ১ কোটি ১০ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫৬ পিস এবং ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬৫ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে বিজিবি। এসব জব্দকৃত ইয়াবাতে আসামিও ধরা পড়েছে। বছরওয়ারির হিসাবে দেখা গেছে যে, জব্দের তালিকা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই পালাতে গিয়ে বিজিবি’র গুলিতে আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেছে বিজিবি।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারত উভয় দেশের মধ্যে মাদক দমনের বিষয়ে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তারা নিজ নিজ দেশের তথ্য একে অপরকে বিনিময় করে মাদক দমনে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। এতে করে মাদকসহ বহনকারীদের দমাতে তিন দেশ উপকৃত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আগে ইয়াবা চোরাচালানের মূল রুট ছিল মিয়ানমারের টেকনাফ সীমান্ত। এই রুটে বিজিবি’র বেশি টহল থাকার কারণে চোরাকারবারিরা রুট পরিবর্তন করেছে। পাশের দেশ ভারত থেকেও আসছে ইয়াবা। সাগর পথে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা ট্যাবলেট। এ ছাড়াও যশোরের বেনাপোল, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, লালমনির হাট, চুয়াডাঙ্গা ও জয়পুর হাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা ট্যাবলেট।
সূত্র জানায়, চোরাকারবারিরা অভিনব পন্থায় ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসছে। বেশি আসছে কাঁচা তরকারির মধ্যে ইয়াবা। বড় বড় লাউ ও মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে কেটে তারা ইয়াবা ট্যাবলেট  নিয়ে আসছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে অনেক বাঁশ আমদানি করে থাকে। সেই বাঁশ ফুটো করে চোরাকারবারিরা ইয়াবা ট্যাবলেট আনছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এমন ৪৬টি ইয়াবা চক্র কাজ করছে। আর দুই দেশের সীমান্তে ১৫৫টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই  চক্রের সদস্যরা সীমান্ত এলাকায় কেউ লবণ ব্যবসায়ী কেউ বিভিন্ন খুচরা পণ্যের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে এই কর্মকাণ্ড করছে। কেউ যাতে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে না পারে এজন্য তারা পরিবার নিয়ে ওইসব বাসায় ভাড়া থাকছেন। তাদের বাসা ভাড়া করে দেয়া এবং ইয়াবা রসদ সরবরাহে ঢাকা ও জেলা পর্যায়ের মাদক ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের লালমনিরহাটের বুড়িমারী সীমান্তের সফিপুর এবং যশোর জেলার সীমান্ত এলাকায় ইয়াবার কারবারিরা সক্রিয় রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তের ওপারের ভারতের সীমান্ত এলাকার মেদিনীপুর, রামকৃষ্টপুর, বহরমপুর ও উড়িষাবাড়ি এলাকায় ইয়াবা চোরাকারবারি সক্রিয় রয়েছে। এ ছাড়াও মিয়ানমারের মংডু, লাটিংপাড়া, ছাইপাড়া, রংবুং এলাকায় ইয়াবা কারবারিরা সক্রিয় রয়েছে।
সূত্র জানায়, উভয় দেশ তাদের সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা চক্রকে দমনের জন্য একমত হয়েছে। তারা এলাকার নামের তালিকা বিনিময়ের ফলে ইয়াবা কারবারিদের দমনে সুবিধা হবে বলে উভয় দেশ মত দিয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর