× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ট্যাক্সিতে এখন ছাদবাগান

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১, শনিবার, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

এতদিন রুফটপ গার্ডেন বা ছাদ বাগানের কথা শোনা গিয়েছিল। বাসাবাড়ির ছাদের ওপর এমন বাগান তৈরি করা হয় বলে নাম ছাদ বাগান। কিন্তু এবার সেই ছাদবাগান দেখা যাচ্ছে থাইল্যান্ডের ট্যাক্সিগুলোর ছাদে। করোনা মহামারিতে ট্যাক্সি পরিচালনা কোম্পানি, এর চালকরা পড়েছেন বিপর্যয়ের মুখে। এক্ষেত্রে সরকারি সরাসরি কোনো সাপোর্ট তারা পাননি। তাই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ট্যাক্সির ছাদে সাজিয়েছেন বাগান। ট্যাক্সি পরিচালনা করে এমন দুটি অপারেটর তাদের ট্যাক্সির ছাদে এমন ছোট ছোট বাগান সাজিয়েছে। এ ক্ষেত্রে চারপাশে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের ফ্রেম।
তার ওপর বিছিয়ে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের ফেলে দেয়া কালো ব্যাগ। তারও ওপরে বিছিয়ে দেয়া হয়েছে মাটি। অবশেষে এই মাটিতে রোপন করা হয়েছে নানা রকম সবজি। যেমন টমেটো, শসা, সিম। ট্যাক্সির চাহিদা কম রাজপথে। তাই অপারেটরদের কার পার্কে অলস সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে এসব ট্যাক্সি। তা যেকারো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। দেখে মনে হবে কোনো চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে। করোনা মহামারি এবং তার প্রেক্ষিতে লকডাউনে এই শিল্প যে কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ট্যাক্সির চালক ও অপারেটররা- তার প্রতি দৃষ্টি ফেরানোর জন্য এই আয়োজন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
রাতচাপ্রুক এবং বোভোর্ন ট্যাক্সি কোঅপারেটরদের মাত্র ৫০০ ট্যাক্সি এখন রাজধানী ব্যাংককের রাস্তায় যাত্রী খুঁজছে। অন্যদিকে শহরের আশপাশে অলস বসে আছে ২৫০০ ট্যাক্সি। ৫৪ বছর বয়সী নির্বাহী থাপাকর্ন আসাওয়ালারকুল এ তথ্য দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে রাজধানী ব্যাংকক ছিল সুনসান নীরব। ফলে সামান্য ভাড়া নিয়ে চলছিল মারাত্মক এক প্রতিযোগিতা। এর ফলে চালকদের আয়ও কমে যায়। তাদের অনেকেই এসব যানের প্রতিদিনের কিস্তি দিতে সক্ষম হন না। তাদের এসব চার্জ অর্ধেক অর্থাৎ ৩০০ বাথ করে দেয়া হয়েছে। তারপরও হিমশিম খাচ্ছেন চালকরা। থাপাকর্ন বলেন, এ কারণে চালকরা গাড়ি রেখে চলে গেছেন। দীর্ঘ সময় গাড়ি অলস পড়ে আছে। সারিবদ্ধ পড়ে আছে গাড়ি। গত বছর যখন করোনা মহামারি শুরু হয় তখনই অনেক চালক গাড়ি জমা দিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। কারণ, তারা ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। আবার অনেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গাড়ি ফেরত দিয়ে চলে গেছেন। অনেকেই গ্যাস স্টেশনে গাড়ি রেখে চলে গেছেন। জানিয়ে গেছেন, সেখান থেকে গাড়ি সংগ্রহ করে নিতে।
এ বছর নতুন করে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে এসব কোঅপারেটিভ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। হাজার হাজার চালক তাদের গাড়ি জমা দিয়ে চলে যান। উল্লেখ্য, মধ্য আগস্টে থাইল্যান্ডে একদিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৩৪০০ তে পৌঁছে। কিন্তু সম্প্রতি তা কমে এসেছে ১৫ হাজারের নিচে। সরকার আশা করছে এই ঢেউ আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সব মিলে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪ লাখ মানুষ। মারা গেছেন ১৪ হাজারের বেশি।
এই পরিস্থিতি ট্যাক্সি কোম্পানিগুলোকে আর্থিকভাবে এক নরকযন্ত্রণায় ফেলেছে। লোন পরিশোধ করতে তাদেরকে লড়াই করতে হচ্ছে। থাপাকর্ন বলেন, রাতচাপ্রুক এবং বোভোর্ন কো-অপারেটিভের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০০ কোটি বাথ। কিন্তু এখনও সরকার কোনো সরাসরি আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার প্রস্তাব করেনি। তার ভাষায়, যদি শিগগিরই আমাদেরকে সাহায্য না দেয়া হয়, তাহলে আমরা আসলেই সমস্যায় পড়বো। এ অবস্থায় ট্যাক্সিতে ছাদ বাগান থেকে বিকল্প আয় আসবে না। কো-অপারেটিভের যেসব স্টাফকে কম বেতন নিতে বলা হয়েছিল, তারা এখন এই ছাদবাগানের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। থাপাকর্ন বলেছেন, এসব সবজিবাগান একদিকে প্রতিবাদের ভাষা। অন্যদিকে এ খাত থেকে যে সবজি হবে তা দিয়ে এই কঠিন সময়ে আমাদের স্টাফদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো। থাইল্যান্ডে এমনিতেই কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি। ২০১১ সালে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বন্যা। কিন্তু এবারের মতো এত বিপর্যয় কখনো ব্যবসায় দেখা দেয়নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর