প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছেন এক যুবতী। পড়শীদের কাছে এ কথা বলা যায় না। তাই তাদের সামনে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। থানায় এ মর্মে ডায়েরিও করা হয়েছে। পুলিশ অনুসন্ধানে দেখেছে, ওই পরিবারটি অপহরণের নাটক সাজিয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের গ্রেটার নয়ডায় গন্ডা জেলায়। সেখানে ২১ বছর বয়সী বিএসসি পড়ুয়া এক ছাত্রী তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। কিন্তু মান রক্ষার জন্য পরিবারের সদস্যরা থানায় অপহরণের অভিযোগ দেন।
বলেন, বৃহস্পতিবার অপহরণ করা হয়েছে তাকে। পুলিশ বলেছে, এ কথা বলে পরিবারটি তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে এবং ভুয়া মামলা করেছে। ওই যুবতীর ১৮ বছর বয়সী এক বোন অভিযোগ করেন তাকে তিনজন পুরুষ অহরণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এতে হস্তক্ষেপ করেন তার ২১ বছর বয়সী বোন। এ সময় অপহরণকারীরা ১৮ বছর বয়সী বোনকে বাদ দিয়ে ২১ বছর বয়সী ওই যুবতীকে অপহরণ করে। অভিযোগে বলা হয়, এক বোন ও দুই ভাই- তাদের সবাই টিনেজার, এদেরকে নিয়ে সকালে মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়েছিলেন বিএসসি পড়ুয়া ওই যুবতী। পথে মারিপাত রেলওয়ে স্টেশনের কাছে অপহরণের ওই ঘটনা ঘটে। কিন্তু পুলিশের মতে, বুধবার নিজের ইচ্ছায় গন্ডার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন ২১ বছর বয়সী ওই যুবতী। ডিসিপি হরিশ চন্দর বলেছেন, বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ওই যুবতীর ফোন বন্ধ ছিল। যেদিন অপহরণের অভিযোগ করা হয়েছে, তার আগের দিন তিনি বাড়ি ছেড়ে গন্ডার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন। তিনি দু’বছর আগে থেকে ওই জেলার এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। হরিশ চন্দর আরো বলেন, দু’বছর আগে ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয় তাদের। তারপর একে অন্যের সঙ্গে চ্যাটিং করতে থাকেন। এক পর্যায়ে একজন অন্যজনকে নিজেদের ফোন নম্বর বিনিময় করেন।
গ্রেটার নয়ডার ওই গ্রামের অধিবাসীরাও বলেছেন, পরিবারটি তাদেরকেও বিভ্রান্ত করেছে। বলেছে, তাদের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তাদের একজন বীরেন্দ্র খারি বৃহস্পতিবার পুলিশে ফোন করে বলেন, আমরা ৫ থেকে ৬ জন বৃহস্পতিবার হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। এ সময় কথিত অপহৃত যুবতীর ভাইবোন আমাদের কাছে এসে কাঁদতে থাকে এবং বলে, তাদের বোনকে অপহরণ করা হয়েছে। পুরো পরিবার আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে। প্রথম দিকে সবাই যখন মনে করেন তাকে অপহরণ করা হয়েছে, তখন সিসিটিভির ফুটেজ সংশয় বাড়িয়ে দেয়। বীরেন্দ্র খারি বলেন, ঘটনাস্থলের ফুটেজে দেখা গেছে কথিত অপহৃত যুবতীর তিন ভাইবোনকে হাঁটতে দেখা গেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে তাদের বোনকে দেখা যায়নি। আমরা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দেখতে পাই, ওই সময় ওই তিন ভাইবোনই ছিল। কোনো ফুটেজেই ২১ বছর বয়সী ওই যুবতীকে দেখা যায়নি। আমি তার সম্পর্কে তার বোন ও ভাইদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেছে, তিনি অসুস্থ। তাদের পিছনে পিছনে আসছে।
এ ঘটনায় ওই যুবতীর পরিবারের বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিল করেছে বদলপুর পুলিশ। এফআইআর করা হয়েছে ওই যুবতীর দাদা, পিতা, চাচার নামে।