× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শাহরাস্তিতে ১১ ঘণ্টা স্কুলের টয়লেটে আটকেপড়া রক্তভেজা মাস্কসহ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার

বাংলারজমিন

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ১১ ঘণ্টা স্কুলের টয়লেটে আটকে পড়া এক শিক্ষার্থীকে রক্তভেজা মাস্কসহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার টামটা উত্তর ইউপি’র হোসেনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীর পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা, সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানায়, জেলার কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউপি’র দক্ষিণপাড়া হাজি বাড়ির আনোয়ার হোসেনের এসএসসি পরীক্ষার্থী বাক প্রতিবন্ধী কন্যা শারমিন আক্তার অন্য সময়ের মতো বিদ্যালয়ে করতে যায়। সেদিন দুপুরে শ্রেণিকক্ষে পাঠ গ্রহণ  ও ছুটি  শেষে শারমিন প্রকৃতির ডাকে সকলের অগোচরে স্কুলের টয়লেটে প্রবেশ করে। ওই সময় বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা আক্তার শানু  টয়লেটের বাইরে সাড়াশব্দ না পেয়ে তালা বন্ধ করে দেয়। এতে বাক প্রতিবন্ধী শারমিন  কারো সহযোগিতা নিতে না পেরে আটকা পড়ে সেখানে। বিদ্যালয় ছুটির পর দিনশেষে মেয়ে শারমিন বাড়িতে না ফেরায় তার পিতা সহপাঠী, স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ১০টায় পরিবারটির মেয়ে হারাবার আতঙ্ক উৎকণ্ঠার মাঝে হঠাৎ করে স্থানীয় স্বর্ণকার বাড়ির আল আমিন বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে টয়লেটে কারো উপস্থিতি টের পায়।
পরে তার পর্যবেক্ষণ শেষে স্থানীয়দের সহযোগিতায় টয়লেটের তালা ভেঙে সেখান থেকে অসুস্থ শিক্ষার্থী শারমিনকে উদ্ধার করে। গত শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি চাউর হলে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় জমায় শিক্ষার্থীর বাড়িতে। ওই শিক্ষার্থী বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে আকার-ইঙ্গিতে তার কষ্টের কথা জানান দেন সবাইকে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীর বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি দিনশেষে রাত অবধি  চরম আতঙ্ক এবং উৎকণ্ঠার মাঝে হঠাৎ করে মেয়ে শারমিনকে বিদ্যালয়ের টয়লেট থেকে অসুস্থ রক্তমাখা মাস্কসহ উদ্ধার করি। সম্ভবত সে টয়লেট থেকে উদ্ধার হতে অতিরিক্ত ডাকাডাকি করতে গিয়ে মুখ দিয়ে রক্ত ঝরেছে। সৃষ্ট ঘটনা প্রসঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা আক্তার শানু জানান, দুপুর নয় আমি বিকাল ৪টার সময় টয়লেটে কারো উপস্থিতির সাড়াশব্দ না পেয়ে তালা বন্ধ করি। প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আমির হোসেন বলেন, সেদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমি বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজ শেষ করতে সেখানে অবস্থান করেছিলাম। তখন পর্যন্ত তিনি কোনোকিছু টের পাননি বলে জানান। ওই রাতে বিষয়টি তিনি মুঠোফোনে অবগত হয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে অবহিত করে ছাত্রীর বাড়িতে পাঠান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান উল্যাহ চৌধুরী বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান উল্যাহ চৌধুরীকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের কারও গাফিলতি পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জে আশির দশকে একটি বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১১ দিন আটকা পড়ে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। পরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯৮০ সালে একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘ছুটির ঘণ্টা নামে তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ওই পর্যন্ত ঘটনাটি না গড়ালেও এখানে ১১ ঘণ্টা পর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শারমিন উদ্ধার হওয়ায় ৪১ বছরের পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি থেকে জাতি রক্ষা পেলো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর