‘আমার মা এখানে থাক, ওষুধ কিনে নিয়ে আসছি।’ ছেলে পরিচয়ে খাবার হোটেলের মালিককে ঠিক এই কথাটিই বলে পালিয়ে গেল তার সন্তান। সেই ছেলে তো আর ফেরেইনি বরং বৃদ্ধা মা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। এমনই এক হৃদয় বিদারক ও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে। সেই মা এখনো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করছে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের শাহী নান্না বিরিয়ানি হাউজে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের মধুগঞ্জবাজারের শাহী নান্না বিরিয়ানি হাউজ। এই খাবার রেস্টুরেন্টেই ভাত খাওয়ার কথা বলে নিয়ে এসেছিল ছেলে পরিচয়দানকারী এক যুবক। সেই যুবক কিছু সময় পরই উধাও হয়ে যায়।
তার কিছু সময় পরই মেজেতে লুটিয়ে পড়েন অজ্ঞাত বৃদ্ধা। হাতে একটি ব্যাগও ছিল। হোটেল মালিক পরে বুঝতে পেরে লোকজন ও পুলিশের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
শাহী নান্না বিরিয়ানি হাউজের ম্যানেজার রিফাত হোসেন বলেন, তার সন্তান বৃদ্ধা মাকে ফেলে পালিয়ে গেছে। আমরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
গতকাল সকালে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার নিথর শরীর পড়ে আছে হাসপাতালের মেঝেতে। রাতের কোনো এক সময়ে তার জ্ঞান নাকি ফিরেছিল। কিন্তু কিছুই বলতে পারেননি। তখনও মুখে ছিল পান। যা হাসপাতালের অন্য রোগীর স্বজনরা মুখ থেকে পরিষ্কার করে। এমন নির্দয় ও অমানবিক ঘটনা যেন আর না ঘটে তেমনটিই প্রত্যাশা সকলের। সেইসঙ্গে দোষী ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করেন তারা।
কালীগঞ্জ থানা ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, উদ্ধারের পর হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। অবস্থার উন্নতি হলেই সব বের হয়ে যাবে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সোহা ইসরাইল বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। এখনো তার জ্ঞান ফিরে আসেনি। কিন্তু তার অক্সিজেন লেভেল ও প্রেসার ঠিক আছে। ওনার নাক অথবা মুখ দিয়ে পয়জনাস কিছু প্রবেশ করার দরুণ এ অবস্থা। ৪৮ ঘণ্টা সময় পার হলেই আশা করা যায় স্বাভাবিক হতে শুরু করবেন।