× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাঙনের শব্দে ঘুম ভাঙে তিস্তা পাড়ের মানুষের

বাংলারজমিন

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার

তিস্তা নদীর তীরের বাসিন্দা ছালেহা বেগম (৬০)। যার প্রতিটি রাত কাটে নির্ঘুম। ছালেহা বেগম বললেন, সংসারের এটা-সেটা কাজ করে গভীর রাতে বিছানায় যাই। ক্লান্ত শরীরে দ্রুত ঘুম আসে। হঠাৎ ভাঙনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘুমভাঙা চোখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি এই বুঝি ঘরবাড়ি ভেসে যায়! জেগে উঠে বাইরে থেকে ঘুরে আসি। আবার ঘুম, আবার একই সমস্যা। এভাবে নির্ঘুম রাত কাটে।’ ছালেহা বেগমের মতো রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের তালুক সাহাবাজ, নিজপাড়া, টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই, হয়বত খাঁ, আজম খাঁ, চর বিশ্বনাথ গ্রামের তিস্তা নদী তীরবর্তী সবাই প্রায় একই আতঙ্কে ভুগছেন।
সম্প্রতি ভাঙনকবলিত ওই গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ভাঙন আতঙ্কে কেউ ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন, কেউ গাছ কাটছেন। বাইরের কোনো লোককে দেখলেই তারা ঘিরে ধরেন। তাদের সামনে ভাঙন ঠেকানোর দাবি জানান। চর গনাই গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম (৫০) বললেন, ‘এ বছর তিস্তার ভাঙনে এই এলাকার ৩টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আবাদি জমি, গাছপালা চলে গেছে। তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।  মোফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তি সবকিছু হারিয়ে নদীর কাছেই একচালা ঘর তুলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, বাপু সারারাত ঘুমাতে পারিনা। তিস্তা নদী সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। কখন যে এই বাড়িটাও নেয় ভাঙ্গনের ভয়ে দিন পাড়ি দিচ্ছি। রাতে ভাঙনের শব্দে ঘুমাতে পারি না। অথচ ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’ একই তালুক সাহাবাজ গ্রামের কৃষক বীরেন্দ্র নাথ  বললেন, গত বছর ভাঙনে ‘হামার ঘরের ভিটা ভাঙি গেছে। সেই থাকি হামরা মানসের জাগাত আচি। হামরা ইলিপ চাই না, ভাঙার হাত থাকি হামার ঘরোক বাঁচান।’
খগেন্দ্র নামের একজন কৃষক বললেন, ‘গত বছর ভাঙনে আমার দুটা ঘর ও এক বিঘা জমি নদীত বিলীন হয়। পড়শির বসতভিটায় ঘর তুলি আছি। কিন্তু ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কাউনিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলামের আর্থিক সহায়তা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কিছু জিও ব্যাগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সেগুলোতে বালু ভর্তি করে ভাঙনরোধের চেষ্টা করছে।  
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা তারিন বলেন, আমরা তিস্তার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আপাতত ভাঙন প্রতিরোধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের আর্থিক সহায়তায় নদী তীরে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর