লক্ষ্মীপুরে বসতবাড়ি বিক্রির প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মো. চৌধুরী মিয়া নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি গুলি করে প্রাণে মারার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার আমানী লক্ষ্মীপুর এলাকায় বিক্ষোভ করেছে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা। এর আগে শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের আমানী লক্ষ্মীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মিয়া বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের দেওয়ানজী বাড়ির মৃত হাসমত উল্যাহ মিয়ার পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এ ব্যাপারে চৌধুরী মিয়ার ভাতিজা মনিরের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ সার্ভেয়ার দিয়ে জমির পরিমাপ করে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন। বিরোধ নিষ্পত্তির একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী পাটওয়ারী বাড়ির চৌধুরী মিয়ার পুত্র বিত্তশালী আজাদ উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মিয়াকে তার বসতভিটাসহ বাড়ির সমুদয় জমি ও ঘর দরজা তার কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেয়।
এতে তিনি রাজি না হওয়ায় শনিবার দুপুরে আজাদ তার অনুগতদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা করে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সপরিবারে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী গ্রামের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরনবী পাটওয়ারী, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের, মুক্তিযোদ্ধা জালাল আহাম্মদ, সফি উল্যাহ, হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
হামলার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. চৌধুরী মিয়া জানান, সম্প্রতি সরকার ১১ লাখ টাকা ব্যয় করে তাকে একটি ঘর করে দিয়েছেন। সম্প্রতি কিছু জমি ও বসতভিটা বিক্রি করার জন্য চাপ দেয় প্রতিবেশী আজাদ উদ্দিন। জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় আজাদ উদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় গুলি করে পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকিও দেয় আজাদ। এ ঘটনার পর পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরনবী পাটওয়ারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার জমি জোর করে নিতে যায় আজাদ উদ্দিন। জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর হামলা কোনোভাবে মেনে নিতে পারিনা।
মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলা মানে দেশের ওপর হামলা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আজাদ উদ্দিনের বিচার দাবি করেছেন তিনি। এছাড়া আজাদের রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার রহস্য উন্মোচনের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে আজাদ উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি একেএম ফজলুল হক জানান, মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মিয়ার পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সত্য প্রমাণিত হলে জড়িত কেউ ছাড় পাবেনা।