× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঝিনাইদহে হতদরিদ্রদের আহাজারি ধরাছোঁয়ার বাইরে হ্যাকাররা

বাংলারজমিন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার

 ঝিনাইদহে সামাজিক কর্মসূচির টাকা বিশেষ করে বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের টাকা ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গেছে। অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কে বা করা হতদরিদ্রদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে টাকার শোকে হতদরিদ্ররা আহাজারি করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হ্যাক করার পর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোটি কোটি টাকা হ্যাক করে উঠিয়ে নেয়া হলো। কিন্তু এ ব্যাপারে নগদ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের গড়িমসির কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলে শত শত বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে হা-হুতাশ বাড়ছে।
শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের হাসি রানী অভিযোগ করেন, তিনি নতুন ভাতাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু প্রথম কিস্তির টাকা তিনি পাননি। নগদ অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখেন তার টাকা কে বা কারা তুলে নিয়েছে।
ফুলহরি ইউনিয়নে হাসি রানীর মতো অনেকের টাকা হ্যাক করে উঠিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সদস্য অনিতা বিশ্বাস। ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কালিকাপুর গ্রামের ফারজানা আফরিন এ্যানি জানান, অসহায় প্রতিবন্ধী হিসেবে তিনি প্রতিমাসে ভাতা পেয়ে আসছেন। তিনি নগদ অ্যাকাউন্ট খোলার পর তার নগদ ০১৯৬৯১৯০১৪৩ নম্বরের সাড়ে চার হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা আসে। কিন্তু উক্ত টাকা গত ৯ই জুলাই কে বা কারা ০১৯০৬৪৯৩৩৯১ নম্বরে ট্রান্সফার করে নেয়। এ ঘটনায় তিনি ১৯শে আগস্ট ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি জিডি (যার নং ৯৯২) করেছেন। কিন্তু এখনো টাকা ফিরে পাননি।
ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সারা জেলা থেকে এ রকম শত শত অভিযোগ পাচ্ছি, কিন্তু তাদেরকে কোনো সহায়তা দিতে পারছি না। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সারা জেলায় মোট ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৬২ জন। এরমধ্যে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি পান ১১৬৬ জন, বয়স্ক ভাতা পান ৫৭ হাজার ৫৬৩, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ২৯ হাজার ৪২৭ ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ২৮ হাজার ৬০৬ জন।
ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামি জানান, সারা জেলা থেকে কতজনের নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হ্যাক করে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে কোনো কোনো উপজেলায় ৫% থেকে ১০% টাকা হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারে। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ১৩৬ জন বয়স্ক, ৪ জন বিধবা, ২৩ জন প্রতিবন্ধী ও ৪ জনের শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা তাদের নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এই টাকার পরিমাণ প্রায় ৪৭ লাখ বলে তিনি জানান।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ জানান, নগদ অ্যাকাউন্ট খোলার পর নগদ কর্মীদের দেয়া গোপন পিন নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারেনি ভাতাভোগীরা। সমাজসেবা থেকে এমন অভিযোগ অধিদপ্তরে দিলে সব গোপন পিন ‘অটো রিসেট’ করে দেয়া হয়। পরে ভাতাভোগীরা গোপন পিন রিসেট করে দেখেন তাদের অ্যাকাউন্টের টাকা আগেই তুলে নেয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, ঝিনাইদহ থেকে ঠিক কতজনের টাকা নগদ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তুলে নেয়া হয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে এক হাজার ভাতাভোগীকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের তালিকা সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দিয়েছি। সেখান থেকে নগদ কর্তৃপক্ষের কাছে গেছে। তিনি বলেন, টাকা উদ্ধারের কোনো সুখবর তার কাছে নেই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর