× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মোবাইল ফোনে ক্যাসিনো, নজরদারিতে একাধিক চক্র

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার

দেশজুড়ে আলোচিত ক্যাসিনো অভিযানের দুই বছরের উপরে রাজধানীর ক্লাবগুলো বন্ধ থাকলেও ধরন বদলে
মোবাইলফোনের বিভিন্ন অ্যাপে এখন চলছে জমজমাট অনলাইন জুয়ার আসর। আর এসব অনলাইন মোবাইল ক্যাসিনোর টাকা লেনদেন হয় বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। এ ছাড়া জুয়ার টাকা বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে চলে যায় দেশের বাইরে অবস্থান করা মূলহোতাদের হাতে। যারা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। এমনটাই জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি নিয়মিত সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব।
সম্প্রতি রাজধানীতে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন অ্যাপে জুয়া চক্রের একাধিক সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ডজন খানিক জুয়াড়ি চক্র গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে বলে জানায় সূত্র।
গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা মহামারির কারণে অনেকেই কাজ হারিয়ে মোবাইলফোনে অনলাইন জুয়া খেলে থাকেন। এ ছাড়া একটি বড় সংখ্যক মানুষ যারা একসময় রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবগুলোতে জুয়া খেলতেন এমন ব্যক্তিরাও এই অনলাইন জুয়ার দিকে ঝুঁকছেন। নাইন উইকেটস ডট কম, স্কাইফেয়ার এবং বেট৩৬৫সহ বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ জুয়া খেলার জন্য জুয়াড়িদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এক্ষেত্রে জুয়াড়ি প্রথমে তার নিজস্ব একটি ইমেইল আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন। এরপর দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনের মাধ্যমে জুয়ায় অংশ নিতে পারেন।
সূত্র জানায়, ক্যাসিনো কাণ্ডের পর জুয়ার ধরন পাল্টিয়েছে জুয়াড়িরা। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক জুয়াড়ির দেয়া তথ্য মতে গোটা দেশজুড়ে রয়েছে অনলাইন জুয়ার নেটওয়ার্ক। দেশের মফস্বল পর্যায়ে এখন জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় এই অনলাইন অ্যাপ। যেখানে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রয়েছেন নানা বয়সীরা। বিপিএল, আইপিএল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচকে কেন্দ্র করে চলে এই জুয়ার আসর। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করে দেশের বাইরে থাকা মূলহোতা বা সুপার এডমিন। সুপার এডমিন সর্বপ্রথম টাকা দিয়ে এই অ্যাপ ক্রয় করে পর্যায়ক্রমে একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। তাদের মধ্যে কেউ সুপার, কেউ মাস্টার এজেন্ট। এ ছাড়া রয়েছে লোকাল এজেন্ট। এক্ষেত্রে নবাগতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আইডি লাগবে মর্মে পোস্ট লিখে থাকেন। পরবর্তীতে জুয়ার মূল নিয়ন্ত্রণ যার হাতে থাকে অর্থাৎ এডমিন একজন এজেন্ট নির্ধারণ করে দিলে তার মাধ্যমে আইডি খুলে শুরু হয় জুয়ার আসর। শর্ত থাকে নির্দিষ্ট এজেন্টের বাইরে তিনি খেলতে পারবেন না। তাহলে আইডি রিজেক্ট হয়ে যাবে। এসব জুয়ার ক্ষেত্রে কয়েন বা রেটিং হিসেবে প্রয়োজন হয় পিবিইউ (পার বেটিং ইউনিট)। যার প্রতিটি ইউনিটের মূল্য এক থেকে দুই’শো টাকা। নিবন্ধন শেষে টাকা দিতে হয় লোকাল এজেন্টকে। সেখান থেকে টাকাটা চলে যায় তাদের মাস্টার এজেন্টের কাছে। পরবর্তী ধাপে সুপার এজেন্টের মাধ্যমে নানা হাত ঘুরে চূড়ান্তভাবে টাকা চলে যায় বিদেশে অবস্থান করা মাস্টারমাইন্ড বা সুপার এডমিনের কাছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অনলাইন অ্যাপ ব্যবহারকারীদের অধিকাংশের বয়স ৩০-এর মধ্যে। অনেকটা মাল্টি পারপাস বা এমএলএম ব্যবসার মতো চক্রের মূলহোতারাই মূলত নিজেদের মধ্যে এজেন্ট তৈরি করে। এ সকল এজেন্টরা আবার সাব এজেন্ট চক্র তৈরি করে। রয়েছে নিজস্ব শেয়ারহোল্ডার। মোবাইলের অ্যাপে থাকা পয়েন্ট বা রেটিংকে তারা কখনো ডলার, পাউন্ড, বিকাশ, ক্ষেত্র বিশেষে নগদ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো কারেন্সিতে ট্রানজেকশন করে থাকে। রেটিং অনুযায়ী সাব এজেন্ট মূল এজেন্টের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে। এভাবে বহু শাখা প্রশাখা এবং সার্কেলের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক মানবজমিনকে বলেন, ইতিমধ্যে অনলাইন জুয়া চক্রের গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যদের দেয়া তথ্যমতে আরও একাধিক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন জুয়া বন্ধে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর