অনলাইন

পুলিশ সদস্যের যমজ শিশুকে এসপি অফিসের সামনে ফেলে গেলেন মা

অনলাইন ডেস্ক

২০২১-০৯-২০

ঝালকাঠিতে আরাফ ও আয়ান নামের ১৬ মাসের মিজ দুই ছেলে সন্তানকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে গেলেন এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রী। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে। খবর পেয়ে শিশু দুটিকে ঝালকাঠি থানার নারী ও শিশু ডেস্কে এনে রাখা হয়। দুই শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে থানা পুলিশ। স্বামী ভরণপোষণ ও চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন না করায় রোববার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে রেখে চলে যান শিশু দুটির মা সুমাইয়া আক্তার।

থানা পুলিশ ও শিশুদের মা সূত্রে জানা যায়, শিশু দুটির বাবা ইমরান হোসেন কাঁঠালিয়া থানায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। তিনি বর্তমানে এক মাসের প্রশিক্ষণের জন্য জামালপুরে অবস্থান করছেন। তাঁর বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মালুহার গ্রামে। ২০১৯ সালের মে মাসে শিশু দুটির মা ঝালকাঠি সদরের খাওক্ষির গ্রামের সুমাইয়া আক্তারের সাথে বিয়ে হয় কনস্টেবল ইমরানের। দাম্পত্য কলহের জেরে এ বছরের মার্চ মাসে স্ত্রীকে তালাক নোটিশ পাঠান ইমরান। তালাক নোটিশ পেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করে সুমাইয়া। শিশু দুটির মা সুমাইয়ার দাবিÑ তালাক নোটিশ পাঠানোর আরও আগ থেকে তাঁর এবং সন্তানদের কোন ভরণপোষণ দিচ্ছে না ইমরান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে চায়ের দোকানি মাহফুজ মিয়া বলেন, বিকালে একজন নারী তাঁর দুই শিশু সন্তানকে এসপি অফিসের চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সামনে রেখে যান। যাওয়ার সময় তিনি বলে যান, তোমাদের সন্তান তোমাদের কাছেই থাক। সন্ধ্যায় ঝালকাঠি সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, শিশু দুটির কান্নায় থানার পারিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের এক নারী কনস্টেবল শিশু দুটিকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ সময় শিশু দুটির শরীরের তাপমাত্রা ছিল অনেক বেশি।

সুমাইয়া আক্তার মুঠোফোনে জানান, গত ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিশু আরাফ ও আয়ান ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। রোববার সকালে চিকিৎসকরা শিশু দুটির বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বলেন। এতে প্রায় প্রায় ৬ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি কনস্টেবল ইমরানকে জানানো হলেও তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তাই বাধ্য হয়ে শিশু দুটিকে নিয়ে পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিনের সাক্ষাতে জন্য যাই। কিন্তু প্রধান ফটকের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ইমরান মিয়া ও মো. সুমন নামে দুই পুলিশ সদস্য ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে শিশু সন্তানদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে রেখে চলে এসেছি। ওদের লালন পালন করতে আমার কোন আপত্তি নেই, কিন্তু খরচ চালানোর মতো সঙ্গতি আমার নেই। বাচ্চা রেখে আসার পরে সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান আমাকে ফোন দিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেন, আমি থানায় না যাওয়ায় বাচ্চার বাবার ফুফাত ভাই কামরুল পুলিশের জিম্মা দিয়ে দেয়।

কনস্টেবল ইমরান মোবাইলে জানান, প্রতি মাসে শিশু দুটির ভরণপোষণের জন্য তিন হাজার টাকা সুমাইয়ার ব্যাংক হিসেবে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী তাঁদের খোঁজ খবর নেই। কিন্তু মা হয়ে সে কিভাবে সন্তানদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ফেলে গেল ?।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি দুই পরিবারের সাথে কথা বলে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি। শিশুদের মা না আসায় তাদের দাদিকে খবর দিয়ে রাতেই শিশু দুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status