যখন তোমার কেউ ছিল না তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে পর হয়েছি আমি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ হয়ে যাওয়ার পর বিজেপির তদানীন্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ওরফে সুপ্রিয় বড়াল এই কথাগুলো মনে মনে উচ্চারণ করেছিলেন কিনা জানা নেই, কিন্তু করলেও দোষের কিছু হতো না। দু'হাজার চোদ্দতে নরেন্দ্র মোদির বিজয়রথ যখন অন্য সব রাজ্যে গড়গড় করে চলছে, বাবুল তখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র বিজেপি সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব সেবারই প্রথম পান বাবুল। দু'হাজার উনিশে আসানসোলে প্রচারে এসে মোদির সেই বক্তব্য- মুঝে বাবুল চাহিয়ে -- কে ভুলতে পারে? তবু, দু'হাজার একুশে মন্ত্রিসভা সাম্প্রসারণে বাবুল মন্ত্রিত্ব হারালেন। ততদিনে বঙ্গে বিজেপির উত্থান হয়েছে। অনেক রথী মহারথীর আগমন হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। মন্ত্রিত্ব খোয়ানোর পর বাবুল ৩১ জুলাই সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করলেন। এরপর আবার তৃণমূলে যোগদান কেন? বাবুলকে প্রায় তিন দশক ধরে নিবিড়ভাবে চেনার সুবাদে বলতে পারি, লড়াই এর ময়দান থেকে বাবুল কখনও পালিয়ে যায়নি।
মন্ত্রী হিসেবে বাবুল যথেষ্ট ভালো কাজ করছিল। অন্যায় চক্রান্ত আর অসম্মান নিয়ে বাবুলকে সরে যেতে হল। সেটা মেনে নেওয়া ওর পক্ষে সম্ভব ছিল না। সাইডলাইনে বসে খেলার ছেলে বাবুল নয়, ও মাঠে নেমে খেলার ছেলে। তাই মমতা বন্দোপাধ্যায় সুযোগ দিতেই ও মাঠে নেমে পড়েছে। রাজ্যসভা না রাজ্যের মন্ত্রী সেই প্রশ্ন অবান্তর, বাবুল সামনের সারিতে খেলবে এটাই বড় কথা। সোমবার দুপুর দুটো বেজে তেরো মিনিটে মমতা বন্দোপাধ্যায় এর সঙ্গে দেখা করবে বাবুল। এরকম একটা সময় কেন? বাবুল বলল- ছোটবেলা থেকেই তো দেখে আসছো আমি একটু সময়, দিনক্ষণ মেনে চলি। ওটা শুভ সময়।
অনেকদিন আগে বাবুলের বাবা সুনীল বড়াল ওর জন্যে ব্যাংকে কয়েন এক্সামিনারের চাকরি ঠিক করার পর সেই চাকরি না করে মুম্বইয়ে গিয়ে গায়ক হওয়ার জন্যে লড়াই করেছিল বাবুল। সেই লড়াইয়ের ঝলক যেন দেখলাম বাবুলের চোখে।