ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গর্জনাপাড়া গ্রামে পরকীয়ায় জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর বিষপানকারী স্বামী আব্দুল লতিফও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
জানা যায়, স্বামী স্ত্রী দুজন দুজনকে পরকীয়ার সন্দেহ করে আসছিলেন। এ নিয়ে দুজনার মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। অবশেষে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামী আবদুল লতিফ নিজেও বিষপান করে। পরে স্থানীয়রা আব্দুল লতিফকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামীর মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্ত্রীকে হত্যার পর বিষপান করে লতিফ।
নিহত দুজনের বাড়ি উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গরজনাপাড়া গ্রামে। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
জানা গেছে, নিহত ছবুরা খাতুন উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিমের মেয়ে। প্রায় ৩০ বছর আগে একই উপজেলার গড়জনাপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফের সঙ্গে ছবুরার বিয়ে হয়।
দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন সন্তান রয়েছে।
লতিফ দীর্ঘদিন কাতারে অবস্থান করছিলেন। প্রায় ৩ মাস আগে সে দেশে এসেছেন। তারা ২ জনই একে অপরকে পরকীয়ার বিষয়ে সন্দেহ করতেন। এ নিয়ে তাদের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো। সম্প্রতি দেশে আসার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ আরও বেড়ে যায়।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ছেলে সাব্বির মাদরাসায় যায়। পরে দুপুরে মাদরাসা থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরে গিয়ে দেখে মুখে স্কচটেপ ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মায়ের নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে আছে। তার বাবা লতিফ বিষপান করে মুমূর্ষু অবস্থায় পাশের খাটে অচেতন হয়ে পড়ে আছে।
এ সময় সাব্বিরের চিৎকারে গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবুরাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় লতিফকে উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) লতিফ মারা যান। রসুলপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক আকন্দ লতিফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(সার্কেল এএসপি- গোপালপুর), ঘাটাইল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার (পিপিএম)-এর নেতৃত্বে ঘাটাইল থানার সদস্যদের নিয়ে দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ওসি আজহারুল ইসলাম পিপিএম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-ই মনে হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার আসামি লতিফের মৃত্যুর খবর কিছুক্ষণ আগে পেয়েছি।