সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের টানা চারটি আসরে গ্রুপ পর্বের বৈতরণীই পেরুতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বাংলাদেশ এবার গণ্ডি ভাঙতে চায়। এতে আশাবাদী দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। এই মিডফিল্ডার সতীর্থদের ওপর আস্থা রেখে ভালো কিছু করতে চান। মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আগামী ১লা অক্টোবর শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ত্রয়োদশ আসর। সাফে অংশ নিতে আজ মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেবে বাংলাদেশ দল।
২০০৩ সালে নিজেদের আঙিনায় প্রথম ও শেষবার দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতায় বিজয় কেতন উড়েছিল বাংলাদেশের। ২০০৫ আসরে সবশেষ ফাইনাল খেলার পর বাংলাদেশ ২০০৯ সালে সবশেষ উঠেছিল সেমিফাইনালে। এবার জামাল আশাবাদী।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এই মিডফিল্ডার বলেন, সতীর্থদের মধ্যে কিছু একটা করে দেখানোর তাড়না অনুভব করছেন। এটা তাকে ভালো করার সাহস যোগাচ্ছে। জামাল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। শেষ সময়ের অনুশীলন সেশনে খেলোয়াড়রা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে, নিজেদের সেরাটা দিতে চাইছে। আমরা আমাদের খেলাটা দেখাতে চাই। কিছু একটা করে দেখাতে চাইছি। এটা ভালো গ্রুপ। আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে চাই। অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কোচ আমাদের মতোই ট্রফি জিততে চাইছেন। আশা করছি, সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছতে পারবো।’
সাফে এবার অংশ নেয়া পাঁচ দলের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে ভারত (১০৭), এরপর মালদ্বীপ (১৬০) ও নেপাল (১৬৮)। বাংলাদেশের (১৮৯) চেয়ে পিছিয়ে কেবল শ্রীলঙ্কা (২০৫)। উদ্বোধনী দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ফেভারিটের তালিকায় ভারতকে সবার উপরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার ছক কষছেন জামালরা। জাতীয় দলের অধিনায়ক বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা আমাদের প্রথম প্রতিপক্ষ। র্যাঙ্কিংয়ের দিকে তাকালে ভারত অবশ্যই ফেভারিট। ওরা এগিয়ে আছে। প্রথম ম্যাচ কঠিন হবে। এরপর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। তবে আমাদের ভালো দল আছে। সবাই সবাইকে জানে। একে অন্যের সঙ্গে খেলেছে। গ্রুপ হিসেবে শক্তিশালী দল। আমার নিজের কনফিডেন্স আছে যে এই দলটি কিছু করতে পারে।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গত চার আসরে ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৩টিতে, ড্র দুটি এবং হার ৭টি। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ অস্কার ব্রুজন এই ধারা বদলে দিতে চান খেলার কৌশলে পরিবর্তন এনে। ৩-৪-৩ ফরমেশন থেকে বেরিয়ে দলকে প্রস্তুত করছেন ৪-৩-৩ ছকে। জামালও জানালেন কোচের ভাবনা পরিষ্কার বুঝতে পারছেন তারা। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘অ্যাটাকিং ফুটবল খেলা- এটা একটা প্রক্রিয়া। সবকিছুই তো একদিনে হবে না। কোচ প্রথম দিন যোগ দিয়েই বলেছেন কীভাবে দলকে খেলাতে চান। সবকিছু পরিষ্কার করে দিয়েছেন। যেই ফর্মেশন দিয়েছেন, সেইভাবে লীগে বেশিরভাগ দলই খেলে থাকে। এর সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিচ্ছি। জেমি ডের অধীনে আগে ৩-৪-৩ খেলেছি। ব্রুজনের নতুন ফরমেশনে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।’ কেবল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া নন, নতুন কোচ অস্কার ব্রুজনও নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বাংলাদেশকে। মধ্যবর্তী এই দায়িত্বটা তিনি রাঙাতে চান চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ক্যারিয়ারের প্রথম জাতীয় দলের দায়িত্বটা স্মরণীয় করেই রাখতে চান। এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন দিক হলো এর ফরম্যাট। পাঁচটি দেশ অংশ নিচ্ছে বলে খেলা হবে রাউন্ড রবিন লীগ ভিত্তিতে। এখানে এক ম্যাচ খারাপ করলে তা পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকবে। নতুন এই ফরম্যাটও বাংলাদেশকে আশাবাদী করছে ফাইনালে ওঠার।