‘ভাগের মা’। দক্ষিণ কলকাতার বারিশা ক্লাবে এবারের দুর্গাপুজার থিম হলো এই ‘ভাগের মা’। এতে একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং করোনাভাইরাস মহামারিতে অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগকে কেন্দ্র করে এই থিম রচনা করা হয়েছে। আছে দেশভাগ, পিতৃপুরুষের ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষের কথা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস। বারিশা ক্লাবের দুর্গাপূজার আয়োজক দেবপ্রসাদ বোস বলেছেন, তারা প্যান্ডেলকে দুটি অংশে ভাগ করেছেন। মণ্ডপের বাম পাশের অংশ বাংলাদেশ সীমান্ত বোঝানো হয়েছে।
ডানপাশের অংশে ভারত সীমান্ত বোঝানো হয়েছে। এর মাঝে নোম্যান্সল্যান্ডে খাঁচার মতো একটি বিশাল কাঠামো বসানো হয়েছে। তার ভেতর একজন নারীকে দেখা যায়। তিনি নিজের সন্তানদের সঙ্গে দেবী দুর্গাকে ধারণ করছেন। এই চিত্রকল্পের আর্টিস্ট রিন্টু দাস। তিনি স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, এবারের দুর্গাপূজায় ইতিহাসকে পেছন ফিরে দেখা হয়েছে। ‘ভাগের মা’ থিম নাগরিকপন্থি এবং ভারতে করোনা মহামারির সময় অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। এ ছাড়া এতে আছে শরণার্থী সংকট। দেশভাগের পর লাখ লাখ মানুষ অসহনীয় দুর্ভোগ সইয়েছেন। তারা সহিংসতার মধ্যে পূর্বপুরুষদের বাস্তুভিটা ছেড়েছেন। এসব কিছুরই ছোঁয়া রয়েছে এই থিমের মধ্যে। বিশেষ করে, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাংলা ভাগ হয়ে গেছে। এক অংশ রয়ে গেছে ভারতে। অন্য অংশের নাম হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান, যা বর্তমানে বাংলাদেশ। ঢাকার ‘ঢাকেশ্বরী দুর্গা’ হয়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের কুমোরটুলির আদর্শ। উত্তর কলকাতার কুমাররা দেবদেবীর মূর্তি বানানোর জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, লক্ষ্মীপুর খেরি সহিংসতা থিম ফুটিয়ে তোলার জন্য কলকাতার একটি দুর্গাপূজার প্যান্ডেল সংবাদ শিরোনাম হয়। এর কয়েকদিন পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিরছে বারিশা ক্লাব নিয়ে ছবি ও ভিডিও। দক্ষিণ কলকাতার এই ক্লাবে এবারের পুজোর থিম হলো ‘ভাগের মা’। কেউ কেউ একে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে দেখছেন।