× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ছাত্রলীগের কমিটি / সিলেটে নাদেলের জয় ক্ষোভ নাসির আজাদ বলয়ে

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৩ অক্টোবর ২০২১, বুধবার

সিলেট ছাত্রলীগের জট খুলেছে। ৪ বছর পর ঘোষণা করা হয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। ঘোষিত কমিটিতে জয় হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বলয়ের। এতে খুশী তার বলয়ের নেতাকর্মীরা। তবে- ক্ষুব্ধ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ বলয়ের নেতারা। নাসিরের বলয় থেকে সাধারণ সম্পাদক দেয়া হলেও এতে খুশী নয় ওই বলয়ের নেতারা। তারা গতকাল বিকালে সিলেটে বিক্ষোভ করেছে। ভাই ও দাদাদের বলয় থেকে বের হতে পারেনি সিলেট ছাত্রলীগ।
দীর্ঘদিন থেকে ভাই ও দাদাদের নেতৃত্বেই চলছে ছাত্রলীগ। এ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। এ কারণে ২০১৭ সাল থেকে সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হয়নি। গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব চাঙ্গা হওয়ার আশঙ্কার কারণেই সিলেটে কমিটি দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এবার কমিটি দেয়ার তোড়জোর শুরু করা হলেও ভাই ও দাদাদের দৌড়ঝাপে বিব্রত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৪ বছর পর গতকাল সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এই কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাহেল সিরাজ। মহানগর ছাত্রলীগে কিশওয়ার জাহান সৌরভকে সভাপতি ও মো. নাঈম আহমদকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জানিয়েছে- এই কমিটি আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সদস্য হয়েছেন জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিপ্লব কান্তি দাস, মুহিবুর রহমান মুহিব, কনক পাল অরূপ, হোসাইন মোহাম্মদ সাগর ও সঞ্জয় পাশী জয়। এছাড়া, মহানগর ছাত্রলীগ থেকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে হুসাইন মোহাম্মদ সাগর ও সঞ্জয় পাশী জয়কে। ছাত্রলীগের তেলীহাওর গ্রুপের নেতারা জানিয়েছেন; এবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে তেলীহাওর গ্রুপ থেকে চাওয়া হয়েছিল জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খানকে। কিন্তু গ্রুপের ভেতরেই রাহেল সিরাজ জাওয়াদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করেন। এ কারণে জাওয়াদকে কেন্দ্রীয় সদস্য করে রাহেল সিরাজকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হলেও তেলীহাওর গ্রুপের নেতারা সেটি মানেননি। এ কারণে এই গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গতকাল বিকালে গ্রুপের নেতাকর্মীরা সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। অপরদিকে, জেলা ছাত্রলীগ নিয়ে মাথা না ঘামালেও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি পেয়েছে ছাত্রলীগের দর্শনদেউরী গ্রুপ। ওই গ্রুপের সিনিয়র সদস্য কিশোয়ার জাহার সৌরভ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল বলয়ের কর্মী সৌরভের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন শাহ আলম শাওন নামের আসাদ গ্রুপের এক নেতা। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্যও। কিন্তু শাওন শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকতে পারেননি। তবে. আসাদ বলয় থেকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে হুসাইন মোহাম্মদ সাগর। মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম আহমদ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিধান কুমার সাহার বলয়ের কাস্মির গ্রুপের নেতা। ওই গ্রুপের নেতা হলেও নাইমের সঙ্গে দর্শন দেউরী গ্রুপের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রয়েছে। বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে বিধান বলয়েও। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম টিলাগড়ের রঞ্জিত বলয়ের ছাত্রলীগ নেতা। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের নাজমুলের প্রতি নজর ছিল। এ কারণে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে মুহিবুর রহমান, জাওয়াদ খান ও রাহেল সিরাজ তীব্র প্রতিযোগিতা করলেও কাজ হয়নি। দীর্ঘদিন পর রঞ্জিত বলয়ে জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ গেল। আর এতে পুরোপুরি মাইনাস হয়েছেন টিলাগড় গ্রুপের আজাদ বলয়ের নেতারা। ঘোষিত কমিটির একটিতেও আজাদ বলয়ের কোনো নেতার নাম আসেনি। এ কারণে চরম ক্ষুব্ধ এই বলয়ের নেতারা। কারণ, টিলাগড়কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু হয়েছিল আজাদুর রহমান আজাদের হাত ধরেই। টিলাগড়কে বলা হয় ছাত্রলীগের হেডকোয়ার্টার। এরপরও আজাদ বলয় পুরোপুরি মাইনাস হওয়ার কারণে অবাক হয়েছেন অনেকেই। তবে, এ ব্যাপারে গতকাল বিকাল পর্যন্ত আজাদ বলয়ের নেতারা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। সিলেটের প্রয়াত নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সাবেক বলয়ের নেতারা লবিং করলেও তাদের কারও জায়গা হয়নি। এদিকে, ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য করা হলেও জাওয়াদ খান ও মুহিবুর রহমান পদ প্রত্যাখান করেছেন। গতকাল নিজেদের ফেসবুক আইডিতে তারা দু’জনই পদ প্রত্যাখান করে স্ট্যাটাস দেন। জাওয়াদ খান তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন- ‘প্রিয় সতীর্থ, সহযোদ্ধা শুভাকাঙ্খী; সদ্য ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। আমি উক্ত সদস্যপদ প্রত্যাখান করলাম। রাজনীতি থেকে যখন অপ রাজনীতি শক্তিশালী হয়ে যায় তখন আমার মতো কর্মীর কাছে প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না।’ কেন্দ্রীয় সদস্যপদ পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অব্যাহতি নিয়েছেন মুহিবুর রহমান মুহিব। মুহিব সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি সভাপতির পদ প্রত্যাশী ছিলেন। এই কমিটি ঘোষণার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ প্রত্যাখান করে স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য করায় আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি আমি এই বিশাল পদের যোগ্য নই। তাই আমি স্বেচ্ছায় এই পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর