× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আল-জাজিরার প্রতিবেদন / তালেবান: এমন দুর্ভাগ্যকে মেনে নিতে পারছে না শিক্ষাবঞ্চিত আফগান মেয়েরা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) অক্টোবর ১৩, ২০২১, বুধবার, ৬:০০ অপরাহ্ন

কাবুলের বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সী রাহেলা নুসরাত। সে তার হাইস্কুলের শেষ বছরে রয়েছে। কিন্তু তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে। তালেবানের অধীনে এখন শুধু ছেলেদেরই স্কুলে আসার অনুমতি রয়েছে। গত মাসে তালেবান স্কুল খোলার ঘোষণা দেয় কিন্তু সেটি শুধুমাত্র ছেলেদের জন্যেই। মেয়েদের এভাবে শিক্ষা বঞ্চিত করায় বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে তালেবান। সংগঠনটি যদিও দাবি করছে, মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ পরিবেশ প্রয়োজন। তবে কবে নাগাদ মেয়েরা স্কুলে ফিরতে পারবে তা স্পষ্ট করছে না তারা।


আল-জাজিরাকে নুসরাত বলেন, শিক্ষা আমাদের অন্যতম মৌলিক অধিকার। কিন্তু আমিসহ মিলিয়ন মিলিয়ন আফগান মেয়েদের থেকে সেই অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। পশ্চিমা সমর্থিত সরকার দীর্ঘ ২০ বছর ক্ষমতায় ছিল আফগানিস্তানে। সেসময় মেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। চরম রক্ষণশীল দেশটিতে কাজটি সহজ ছিলনা। তাছাড়া ২০১৫ সালে ইউনেস্কোর এই জরিপ অনুযায়ী, দেশটির ৫০ ভাগ স্কুলেই ব্যবহারযোগ্য ভবনের সংকট রয়েছে। এরপরেও তখন মেয়েরা স্কুল, কলেজসহ উচ্চশিক্ষা নিতে শুরু করেছিল।

২০ বছর পর যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অনেক আফগানই ভেবেছিলেন এবার হয়তো জীবন কিছুটা স্বাভাবিক হবে। কিন্তু এখন উল্টো কয়েক মিলিয়ন মেয়েকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। নুসরাত বলেন, যখন আফগান সরকারের পতন ঘটলো সঙ্গে সঙ্গে আমি শিক্ষার অধিকার হারালাম। এই প্রথম আমাকে কাঁদতে হয়েছে শুধুমাত্র আমি মেয়ে বলে। তালেবান অনুরোধ করছে যাতে শিক্ষিতরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে না যায় অথচ তারা নতুন করে শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। নুসরাত এখনও বুঝতে পারছে না কেনো মেয়েদের স্কুলে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। কট্টরপন্থীরা দেশের ক্ষমতায় আসছে বুঝতে পেরে দেশ ছেড়ে পালায় হাজার হাজার আফগান তরুণ। নুসরাতও এখন বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। তালেবানের অধীনে কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না আফগান তরুণরা। নুসরাত বললো, আমি কাবুলে ১৪ বছর পড়াশুনা করেছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছি, মাধ্যমিকে পড়েছি। কিন্তু এখন দেশ ছাড়ার আর কোনো বিকল্প আমার নেই। আমি এখন বিদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদন করবো এবং আমাকে কোনো না কোনো দেশ সুযোগ দেবেই।

প্রথম থেকেই তালেবানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল পাকিস্তান। দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা তালেবানকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু নারীশিক্ষা নিয়ে তালেবানের এমন মধ্যযুগীয় অবস্থানে পাকিস্তানও দ্বিধাগ্রস্থ। তারা এরইমধ্যে এ নিয়ে তালেবানের সমালোচনা করেছে। প্রথম থেকেই পশ্চিমাদের সঙ্গে তালেবানের আলোচনার মধ্যস্ততা করেছে কাতার। সেই কাতারও তালেবানের কঠিন নিন্দা করেছে। এমনকি যেই ইসলামিক আইনের কথা তুলে তালেবান নারীদের শিক্ষা বঞ্চিত করছে সেটিও তালেবানের অন্য ইসলামি দেশগুলোকে দেখে শেখা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত মাসে কাতারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল-থানি বলেন, তালেবান কাতারকে প্রচণ্ড হতাশ করেছে। তারা আফগানিস্তানকে পেছনে টেনে নিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নারীদের শিক্ষা নিয়ে তালেবান যা করছে তা ইসলামপন্থী চিন্তা নয়। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো যোগাযোগ নেই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর