× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৭ অক্টোবর ২০২১, রবিবার

ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন ‘ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডে নানা অনিয়মসহ ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান কমিটি। সংগঠনটি ঢাকা ওয়াসার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সমিতির আর্থিক ও সম্পত্তিসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকা ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সমিতির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতাউল করিম ও সম্পাদক মো.শাহাব উদ্দিন সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহাব উদ্দিন সরকার বলেন, গত ৩০শে সেপ্টেম্বর সমবায় অধিদপ্তর  থেকে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ২০১৮-২০২০ সময়কালের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে সমিতির তিন বছরের কমিশন বাবদ আয়ের ১৩২ কোটি টাকার কোনো হিসাব পায়নি অডিট কমিটি। নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই অর্থ সমিতির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি আত্মসাৎ করেছে। অডিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৬ই জুলাই থেকে ২০১৮ সালের  ৩০শে জুন পর্যন্ত চুক্তি মোতাবেক পিপিআই নামীয় প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা হতে রাজস্ব আদায়ে ঠিকাদারি বিল বাবদ সমিতি ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকাসহ মোট ১৩৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৬৩ টাকা পেয়েছে। এ অর্থ থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে হিসাব বিবরণীতে মাত্র ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা হিসাবভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকার কোনো হিসাব নেই।
২০১৬ সালে সমিতির সভাপতি ছিলেন হাফিজ উদ্দিন ও সম্পাদক আতাউর রহমান মিয়া এবং ২০১৯ সালে সভাপতি ছিলেন মো. আক্তারুজ্জামান ও সম্পাদক ছিলেন মো. জাকির হোসেন। আলোচিত সময়ে সমিতির এ দুই কমিটির পিপিআই পরিচালনা পর্ষদে হাফিজ উদ্দিন, মো. আক্তারুজ্জামান ও মিঞা মো. মিজানুর রহমানসহ আরও বেশকিছু সদস্য বিধিবহির্ভূত ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে খরচ ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করছে বর্তমান কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, পূর্বের কমিটি ও পরিচালনা পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের ২৬শে ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত সময়ে সমিতি ও পিপিআই প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা হিসাব থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই প্রায় ৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। যার হিসাবও পাওয়া যায়নি। অডিট রিপোর্টেও সেই চিত্র উঠে এসেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের ২০শে আগস্ট থেকে নিয়মিত ও বৈধ কমিটি না থাকায় সমিতি ও সমিতির প্রকল্প পিপিআইয়ের অর্জিত তহবিল সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে ব্যয় বা বণ্টন হয়নি। এ সময়ের পূর্বেও সমিতির অর্থ নয়-ছয় হওয়ার অনেক আলামত রয়েছে। বিষয়টি অনুধাবন করে ঢাকা ওয়াসা কর্র্তৃপক্ষ আইনগত অধিকার না থাকলেও সংস্থাটির কর্মচারীদের সমিতি হওয়ায় নৈতিক দিক বিবেচনা করে ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে ঠিকাদারি বিল বাবদ ঢাকা ওয়াসা থেকে পাওয়া ৪৪৫ কোটি টাকা, সমিতির মিটার বিক্রয়লব্ধ আয় ও অন্যান্য আয় কীভাবে কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে এবং সম্পদ ও পরিসম্পদের হিসাব চেয়ে ২০১৯ সালে ৩০শে এপ্রিল সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে চিঠি দেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সমিতি কোনো সাড়া দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সমিতির প্রকল্প পিপিআই-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক ব্যবহৃত টয়োটা গাড়িটি প্রকল্পের তৎকালীন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মো. আক্তারুজ্জামান ২০১৮ সালের ৭ই নভেম্বর  থেকে দখলে নিয়ে ব্যবহার করেছেন। বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর গাড়িটি ফেরত চেয়ে বার বার চিঠি  দিলেও গাড়ি ফেরত দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে সংবাদ মাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারলাম গাড়িটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির লিটন, আলী হাসান, নজরুল ইসলাম রিপন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এদিকে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আগেই উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনকারীদের অবৈধ বলে দাবি করেছেন আগের কমিটির কয়েকজন। তাদের মধ্যে ছিলেন হুমায়ুন কবির, শাহিন খান। এ সময় দু’পক্ষ বাকযুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে। আগের কমিটির নেতাদের দাবি, বর্তমান কমিটির সভাপতি আগের কমিটিতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর