নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুই শিশুসন্তানকে ফেলে পরকীয়ার টানে অজানার উদ্দেশ্যে উধাও হয়ে গেছেন এক গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর নাম ইনসানা বেগম। এক সন্তানের জনক রাজমিস্ত্রি সোহেলের সঙ্গে চলে গেছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। এটি ঘটেছে বোতলাগাড়ী ইউপি’র পোড়ারহাট সংলগ্ন কিসামত কাদিখোল ডাঙ্গাপাড়ায়। আর ফেলে যাওয়া দুই সন্তানের নাম হলো- মনিরা (৪) ও ইমন (২)। দুধের এই বাচ্চা দু’টো চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে মা ঘরে ফেরার আশায়। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল মিলছে না। উল্টো পরকীয়া প্রেমিকের পরিবার থেকে দেয়া হচ্ছে হুমকি।
থানায় দেয়া অভিযোগে মো. মিন্টু জানান, গত ৯ই অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার সময় আমার স্ত্রী ইনসানা বেগম ও সোহেল একে-অপরের হাত ধরে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমান। এ সময় এলাকায় বিদ্যুতের লোডশোডিং চলছিল। এই সুযোগে তারা স্থানীয়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। সব মিলে প্রায় এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা নিয়ে তারা উধাও হয়। ঘটনার ক’দিন আগে থেকে সোহেল অযাচিতভাবে আমার বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিল। আমি তার সন্দেহজনক ঘোরাফেরা নিয়ে প্রতিবাদ করলে সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে যে, যেকোনো দিন সুযোগ পেলেই তোর স্ত্রী ইনসানাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো। এমন হুমকি দেয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সে আমার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সহায়তাকারীসহ চারজনের নামে গত ১০ই অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। অভিযোগপত্রে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা হলেন- সোহেল, আজিবুল, রশিদুল ইসলাম ও সুর্যাতন নেছা। থানায় অভিযোগ দেয়ার পর এএসআই নূর আমীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অথচ থানায় অভিযোগ দেয়ার পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও আসামিদের গ্রেপ্তারে নেই পুলিশের কোনো তৎপরতা। কথা হয় অভিযোগকারীর চার বছর বয়সী মেয়ে মনিরার সঙ্গে। মনিরা সাফ জানিয়ে দেয় তার মা ইনসানা বেগম রাজমিস্ত্রি সোহেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় স্থানীয় নারীনেত্রী খালেদা বেগমের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোহেলসহ তারা সবক’টা ভাই ব্যাভিচারী ও পরধনলোভী এবং নারীলিপ্সু। সোহেলের বড় ভাই রেজাবুল স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নূরবানুকে বিয়ে করেছে। তার আরেক ভাই রশিদুলও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় স্থানীয় সালিশ বৈঠকে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জরিমানা দেয়। এমনকি তারা স্ত্রীর নামে বদনাম রটিয়ে ফায়দা হাসিল করে। এলাকাবাসীও খালেদা বেগমের আনিত অভিযোগ সমর্থন করেছেন। এ বিষয়ে কথা হয় পরকীয়া প্রেমিক সোহেলের বাবা সুলতান আলীর সঙ্গে। তিনিও তার ছেলেদের অসৎ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের কথা জানেন বলে জানান। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন- ইউপি চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান সরকার বেঁচে থাকলে এলাকায় এমন জঘন্য অপরাধ কেউ করার সাহস পেতো না। বর্তমানে এলাকায় কোনো নীতিবান ও নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ভালো মানুষ না থাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। অভিযোগ বিষয়ে জানতে কথা হয় সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কর্ণগোচরে এখনও আসেনি। বাদী যোগাযোগ করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।