× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্র সক্রিয়

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৭ অক্টোবর ২০২১, রবিবার

২০১৮ সালের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সুন্দরবনকে বনদস্যুমুক্ত ঘোষণার পর থেকে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য পুনরায় ফিরে আসছে। সুন্দরবন হরিণ, বাঘসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সুযোগকে ব্যবহার করে কিছু দুষ্কৃতকারী ব্যক্তি বন্যপ্রাণী শিকারসহ এদের চামড়া পাচার করছে। এসব দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে র‌্যাব-৬ অভিযান চালিয়ে ১৮টি হরিণের চামড়াসহ বন্যাপ্রাণী পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে  গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলো- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবনিয়া এলাকার মো. আবদুল হাকিম (৫০) ও একই জেলার শরণখোলা উপজেলার সোনাতলার মৃত আলী মিয়া হাওলাদারের ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (৩৫)।
র‌্যাব-৬ খুলনা সদর দপ্তরে প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য তুলে ধরেন পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ। তিনি বলেন, র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর বাজার এলাকা থেকে চোরা শিকারি হাকিম ও কামরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮টি হরিণের চামড়া, দুটি মোবাইল ও নগদ দুই হাজার টাকা জব্দ করা হয়। পরস্পর যোগসাজশে সুন্দরবন থেকে চামড়াসহ হরিণের গোশত সংগ্রহ করে বেশি মুনাফার লোভে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে আটক দুই জন।
র‌্যাব-৬ এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগশাজসে সুন্দরবন হতে চামড়াসহ হরিণরে গোশত সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে কতিপয় উচ্চ বিলাসী মানুষের নিকট অধিক মোনাফার লোভে সরবরাহ করতো। তারা এক একটি হরিণের চামড়া ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। তিনি আরও বলেন, বাগেরহাটে জেলার শরণখোলায় বন্যপ্রাণী চক্রের মূল্য হোতা রয়েছে বলে আমরা গোয়েন্দা তথ্য জানতে পেরেছি। তাদেরকে ধরতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সুন্দরবনে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বনবিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে, আবার কখনো তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বনে ঢুকে শিকারিরা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে। এদের সঙ্গে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সখ্য রয়েছে। তারা শিকারি চক্রের কাছ থেকে হরিণের গোশতসহ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করায় দিন দিন সুন্দরবনে হরিণ শিকার বাড়ছে। জানা গেছে, সংঘবদ্ধ চোরা শিকারিরা সুন্দরবনের গহিনে কেওড়া গাছের ফাঁকে ফাঁকে অবস্থান নিয়ে নৌকা, ট্রলার ও গাছে মাচান পেতে হরিণের গতিবিধি লক্ষ্য করে। হরিণ নদী ও খালের চরাঞ্চলে ঘাস খেতে আসে। শিকারিরা এসব স্থানে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে। কখনো তারা গুলি ছুড়েও শিকার করে। পরে গোপন আস্তানায় গোশত তৈরি করে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে। সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলা, শরণখোলা, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছাসহ বনের আশেপাশ এলাকায় সবচেয়ে বেশি হরিণের গোশত পাওয়া যায়। এভাবে হরিণ শিকার করে বিক্রি করতে গিয়ে অনেকে ধরা পড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। জানা গেছে, বাগেরহাটে পুলিশ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ও ফেব্রুয়ারি মাসে সুন্দরবন থেকে শিকার করা চারটি মাথা, ১৯টি হরিণের চামড়া, ১২০ কেজি গোশত জব্দ করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় ১২ জন চোরা শিকারিকে। সুন্দরবন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা এ বন্যপ্রাণীর অংশ বিশেষসহ শিকারিদের গ্রেপ্তার করে। বন্যপ্রাণী আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সমপ্রতি সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রক্ষায় অপরাধে জড়িতদের তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার বিধিমালা-২০২০ অনুমোদন হয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বাঘের চামড়াসহ আটক করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে তথ্য প্রদানকারীকে ৫০ হাজার টাকা ও সুন্দরবনের বাইরে বাঘের চামড়াসহ আটক করার তথ্য প্রদানকারীকে ২৫ হাজার টাকা, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে হরিণের চামড়াসহ আটক করার সহায়তাকারীকে ২০ হাজার টাকা ও সুন্দরবনের বাইরে হরিণের চামড়াসহ আটক করায় সহায়তাকারীকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তথ্য প্রদানকারীর নিরাপত্তা ও তথ্য গোপন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর