আফগানিস্তানের তালেবানদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো তাড়াহুড়ো নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তবে তাদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হওয়া প্রয়োজন বলে জোর দেন তিনি। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি বলছে, সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর অন্য নেতাদের সঙ্গে পুতিন ভিডিওকলে কথা বলছিলেন শুক্রবার। এতে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে তালেবানরা যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে, তা নিন্দনীয়। এ জন্য নিন্দনীয় যে, এই সরকারে আফগান সমাজের পুরো অংশের প্রতিফলন ঘটেনি। তবে তারা নির্বাচনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। একটি কার্যকর রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে তোলার প্রচেষ্টার কথা বলেছে। পুতিন বলেন, তালেবানদের স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের তাড়াহুড়ো থাকা উচিত নয়।
আমি মনে করি, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলা উচিত। তবে তাও হুড়োহুড়ি করে নয়। এ নিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে কথা বলতে পারি।
এ সময় তিনি আগামী সপ্তাহে আফগানিস্তানের সব পক্ষকে নিয়ে মস্কোতে আরেকটি আলোচনা আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন। জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও পাকিস্তানের আলোচনা শুরু করা উচিত। তার ভাষায়, আন্তঃআফগান সমঝোতা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আমাদের সাপোর্ট করা উচিত এবং ওই দেশটিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করা উচিত। উল্লেখ্য, বুধবার তালেবান ও আফগানিস্তানের অন্য অংশগুলোকে নিয়ে আলোচনা আয়োজন করেছে রাশিয়া। আফগানিস্তান বিষয়ক ক্রেমলিনের দূত জামির কাবুলভ শুক্রবার বলেছেন, রাশিয়ার রাজধানীতে ‘মস্কো ফরমেটের’ আলোচনায় উপস্থিত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে তালেবানরা। এ ছাড়া আফগানিস্তান নিয়ে মস্কোতে আলোচনায় বসার কথা রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও পাকিস্তানের কূটনীতিকদের।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে ১০ বছর যুদ্ধ করেছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। তারপর ১৯৮৯ সালে তারা সেনা প্রত্যাহার করে। তারপর থেকেই দেশটি নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায় প্রভাব খাটাতে কূটনৈতিক তৎপরতা বিস্তার করেছে মস্কো। অন্য দেশগুলোর মতো আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে নিজেদের দূতাবাস খালি করেনি রাশিয়া। পক্ষান্তরে তালেবানরা ক্ষমতা দখল করার পরই দ্রæত তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। রাশিয়ার সন্ত্রাসী তালিকায় ২০০৩ সালে নাম ছিল তালেবানদের। তারপর সেই তালিকা থেকে তালেবানদের নাম বাদ দেয়নি দেশটি। রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, এই গ্রæপের সঙ্গে যেকোনো রকম যোগাযোগ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাঁধ ঝাঁকায়। তারা বলে, আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতায় সহায়তা করছে শুধু।
ওদিকে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এবং অন্য মিলিট্যান্ট গ্রæপগুলো যে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, সে বিষয়ে জোর দিয়েছেন পুতিন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মাদক পাচার একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। হুমকি মোকাবিলায় মধ্য এশিয়ায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্রদের সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে রাশিয়া। একই সঙ্গে উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানে যৌথ মহড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে, যা আফগানিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত।