× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি বিএনপি’র

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ অক্টোবর ২০২১, সোমবার

কুমিল্লার ঘটনাসহ সারা দেশে পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, এই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যারা রয়েছে তাদেরকে সঠিক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমি দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এজন্য যে, সরকারের এই হীন প্রচেষ্টা যেন কোনোমতেই সফল না হয়, আমাদের বাংলাদেশের যে আত্মা সেই আত্মাকে কখনো যেন তারা বিনষ্ট না করতে পারে সেজন্য দেশবাসী সচেষ্ট থাকবেন।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য যে একটা সকল ধর্মের মানুষ সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে বাস করি তাকে বিনষ্ট করা, ধ্বংস করা। আমরা পাশাপাশি বাড়িতে বাস করি, ঈদের সময়ে আমাদের হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকেরা আমাদের বাড়িতে আসেন, তাদের পূজায় আমরা যাই। এটা আজকে নয়, আমি যখন ছোট সেই সময় থেকে দেখছি যে, একটা সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশ বাংলাদেশে আছে। একে বিনষ্ট করার জন্য, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা (ক্ষমতাসীন) উস্কানি দিয়ে, মদত দিয়ে আজকে আমাদের দেশে যে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি সেই সমপ্রীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা এই প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন অবমাননা, পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে নিরাপত্তা বিধান না করে হামলা-ভাঙচুর-সংঘাত-সংঘর্ষকে উস্কিয়ে দিয়ে দুই ধর্মীয় সমপ্রদায়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের জীবন কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চক্রান্তে মেতে উঠেছে সরকার।
গণতন্ত্রের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে তারা সামপ্রদায়িক সংঘাতের উপকরণ ছড়িয়ে সহিংস রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে উদ্ধারকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সুদৃষ্টি পেতে চায়। বর্তমান যুগে কিছুই ঢেকে রাখা যায় না। অবগুন্ঠন উন্মোচিত হয়ে সত্য প্রকাশ পাবেই। কুমিল্লার পূজাম-পের ঘটনার রেশ ধরে সারা দেশে যে সরকারের ন্যক্কারজনক পরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে সেটা আজ জনগণের কাছে স্পষ্ট। সরকারের পরিকল্পিত সামপ্রদায়িক উস্কানি ও এর ফলোশ্রুতিতে দেশব্যাপী রক্তাক্ত হিংসাশ্রয়ী ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘নীরব’ ভূমিকার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্গাপূজার প্রাক্কালে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আশ্বাস দেয়ার পরও কেন পবিত্র কোরআন অবমাননা, মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটলো। কুমিল্লার সাধারণ মানুষের মতো আমরাও একমত যে, পুলিশ বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিলে নানুয়াদিঘির পাড়ের ম-পের ঘটনাটি নির্মম অমানবিকতার দিকে গড়াতো না। একই ঘটনা ঘটেছে চৌহমুনীতে। বার বার প্রশাসনকে বলার পরে, পুলিশ বাহিনীকে বলার পরেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ৬ ঘণ্টা ধরে সেখানে নৈরাজ্য চলেছে, লুটপাট চলেছে, ভাঙচুর চলেছে। কিন্তু তারা নীরব ছিল। তারা ছিল, দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

তিনি বলেন, এখন একটি প্রশ্ন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরীফ পূজামণ্ডপে নিয়ে গেছে? সরকারের নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাসের পর কেবলমাত্র ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট দুষ্টচক্র ছাড়া দেশের জনগোষ্ঠীর কোনো ধর্মীয় সমপ্রদায়ই এই কদর্য কাজ করবে না বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমি এই ঘটনা জানার পরপরই একটি বিবৃতিতে বলেছিলাম- সরকারের মদতেই কুমিল্লার নানুয়ারদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে চক্রান্তমূলক কুৎসিত কাজটি করা হয়েছে। এর বড় প্রমাণ ঘটনার পরপরই হিন্দু সমপ্রদায়ের মানুষেরা অতিসত্বর পূজামণ্ডপ ও মন্দিরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলো। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এই অনুরোধে সাড়া না দিয়ে পুলিশ পাঠিয়েছে অনেক পরে। শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেশের সমস্ত অর্জনগুলোকে বিসর্জন দিয়ে এবং তাকে ধ্বংস করে আজকে আওয়ামী লীগ এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। সরকার তার এজেন্টদের দিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়ে গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম তার থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসব করছে। উদ্দেশ্য জনগণকে বিভ্রান্ত করা।

‘কল্পিত স্টোরি’
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, যখন কোনো ঘটনা ঘটে তখন বিএনপিকে জড়িত করার চেষ্টা করে সরকার। সেজন্য কল্পিত স্টোরি তারা তৈরি করে। অথচ এই কাজটা তারাই করে। মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের দলের এক নেতার সঙ্গে ফোনালাপের খবর ফাঁস হয়েছে বলে একটি অডিও কল ভাইরাল করা হয়েছে। সরকার এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। কণ্ঠ কাটপিস করে সুপার এডিটিংয়ের মাধ্যমে বানোয়াট ফোনালাপ ইতিমধ্যে অসংখ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ভাইরাল করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের মদতে একটি অসাধু মহল প্রতিনিয়ত এই হীন কাজগুলো সর্বক্ষণ করে যাচ্ছে। এই কাজগুলো করার জন্য এক লাখ লোককে হায়ার করা হয়েছে। আমান উল্লাহ আমানের ফোনালাপটি ভুয়া, বানোয়াট, অসত্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপার এডিটেড। আমি এই চক্রান্তমূলক ফোনালাপ ভাইরালের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগ এক লাখ কর্মীকে হায়ার করেছে। এটা তারা বলেছে- যা পত্রপত্রিকায়ও এসেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর