× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তবে কি কমলগঞ্জেই হচ্ছে মেডিকেল কলেজ?

এক্সক্লুসিভ

ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে
১৯ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার

তবে কি কমলগঞ্জেই হচ্ছে  জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সরকারি মেডিকেল কলেজ।  রোববার বিকাল থেকেই এমন প্রশ্ন আর নানা গুঞ্জন জেলাজুড়ে। মেডিকেল কলেজ জেলা সদরে হবে নাকি কমলগঞ্জে। এ নিয়ে পক্ষে- বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব হচ্ছেন অনেকেই। নতুন করে হঠাৎ কেন এমন পুরনো বিতর্ক। এ বিষয়ে জানা গেল জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ১৮৯.৬১ একর জায়গা দু’টি মৌজায় কুমড়াকাপন ১১৯.৬১ ও কমলগঞ্জ রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজায় ৭০ একর জায়গা রয়েছে। ১১৯.৬১ একর জায়গা স্বাস্থ্য বিভাগের নামে দখল ও কাগজপত্রাদি ঠিক থাকলেও ৭০ একর জায়গার সীমানা, দখল ও কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। জানা যায়, ১৯৭৬ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও  হিড বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ওই জায়গা ও স্থাপনা ভোগ দখল করে হিড বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। জায়গার মালিকানার খোঁজখবর নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা কমলগঞ্জে আসেন।  রোববার দুপুরে উচ্চপর্যায়ের ওই টিমে ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান ও মো. অলিউল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মেহেদী হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলগঞ্জ সোমাইয়া আক্তার, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবেদা খানম, কমলগঞ্জ  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুব আলম ভূঁইয়া, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প. প. কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুল ইসলাম চৌধুরীসহ তফসিলদার ও সার্ভেয়াররা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ওই জায়গা সরজমিন পরিদর্শন ও মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণের ছবি ভাইরাল হলে বিষয়টিকে অনেকেই বলছেন এটি ওখানে সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রাথমিক কাজের অংশ। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি অস্বীকার করছে। জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবিতে নানা আন্দোলনে সরব জেলার সামাজিক সংগঠন, স্থানীয় নাগরিকবৃন্দ ও প্রবাসীরা। কিন্তু তাদের ওই দাবির আন্দোলন চলাকালীন সিলেট বিভাগের দু’টি জেলায় স্থাপিত হয় সরকারি মেডিকেল কলেজ। তখন আন্দোলনকারীরা বিক্ষুব্ধ ও হতাশ হলে সরকার দলের নেতৃবৃন্দ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায় থেকে জেলায় মেডিকেল কলেজ হবে এমনটিই আশ্বস্ত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম পরিদর্শনে আসেন এবং তারা পজেটিভ রিপোর্টও দেন। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি বছরের ৬ই জুন সংসদে সম্পূরক বাজেট বক্তৃতায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি করেন মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের এমপি সাবেক চিফ হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের যৌক্তিকতা দেখিয়ে বলেন- ওখানে ৩ শ’ ৫৮ একর জায়গা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। তাই ওই স্থানে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্রয় করার প্রয়োজন হবে না। সংসদে দেয়া তার ওই বক্তব্য তখন জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কারণ তিনি ওই আন্দোলনের সঙ্গে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত ছিলেন।  তার ওই বক্তব্যের পর মৌলভীবাজার-৩ (রাজনগর- মৌলভীবাজার সদর) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ ওই সময় যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশন টকশোতে তার বক্তব্য তোলে ধরেন। ওই বক্তব্যে তিনি জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি দৃঢ়কণ্ঠে খোলাসা করেন। তিনি বলেন- জেলার যেকোনো বড় প্রতিষ্ঠান বা মূল প্রতিষ্ঠান জেলা সদরেই হয়। মেডিকেল কলেজ মৌলভীবাজার সদরেই হবে। সে ব্যাপারে জেলাবাসী কারও কোনো আপত্তি নেই। তিনি বলেন- ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে ১০ একর  ও স্বাস্থ্য বিভাগের আরও ৫-৬ একর জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া  শহরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় হাজার একর সরকারি জায়গা রয়েছে। তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দু’নেতার ওই বক্তব্য নিয়ে পক্ষে- বিপক্ষে তোলপাড় হয়। রোববার থেকে নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবারো এ বিষয়টি লেখালেখি হচ্ছে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন রোববার থেকে কমলগঞ্জে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে যে প্রচার হচ্ছে তা সঠিক নয়। ওখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জায়গার সীমানা চিহ্নিতকরণ, প্রাচীর নির্মাণ  ও  অ-জরিপকৃত ভূমি উদ্ধারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করেন। এবিষয়গুলো নিষ্পত্তি করতে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর