ভুল চিকিৎসায় থমকে আছে হাসান মিয়ার জীবন। ধুলাবালি মাখা শরীর, পায়ে লোহার শিকল। শুধু তাকিয়ে থাকে মায়াবি চোখ দিয়ে। শিশুকাল থেকে শুরু করে শৈশব, কৈশর, জীবন যৌবনের প্রায় ২২টি বছর কেটে যাচ্ছে শিকলবন্দি অবস্থায়। পরিবারের দাবি একটি ভুল চিকিৎসায় এমনটি হয়েছে তার। তবে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আর কোনো চিকিৎসা মেলেনি। গ্রামের একটি মেঠো রাস্তা দিয়ে চলার পথে প্রতিবেদকের চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। মানসিক প্রতিবন্ধী হাসানের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামে। হাসানের মা শুকুরন নেছা বলেন, আমি মা হয়ে সন্তানের এমন দৃশ্য কীভাবে সহ্য করবো বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন খাবার দিলে খায়, না দিলে খায় না। কথা জ্ঞান নেই তার। রাতে ঘরের বারান্দায় শিকল বন্দি এবং দিনে রাস্তার পাশে জাম গাছেই তার কেটে গেল প্রায় ২ যুগ। নিউমোনিয়া রোগজনিত কারণে ৩ বছর বয়সে ২ বছর ধরে ডাক্তার অলোক কুমার সাহার কাছে হাসানকে দেখানো হয়। সমস্যার কথা বললে ডাক্তার বলেন ভালো হয়ে যাবে কিন্তু তিনি ভুল চিকিৎসা দেয়ায় এমনটি হয়েছিল বলে পরবর্তীতে অন্য ডাক্তারের কাছে গেলে জানা যায়।
হাসানের পিতা রিজাউল ইসলাম বলেন, ছেলে হাসানকে নিয়ে আমার অনেক আশা ছিল, কিন্তু ঝিনাইদহের ডাক্তার অলোক কুমার সাহার ভুল চিকিৎসায় সব আশা ভঙ হয়ে গেছে। ডাক্তারের কাছে পরবর্তীতে গেলে তাড়িয়ে দিতেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছি। এখন আমি সর্বস্বান্ত। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পেলে আমার ভালো হয়। তবে আমার ছেলের ডাক্তার আর কোনো খোঁজ রাখেননি। এ ঘটনায় ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মণ্ডল বলেন, গত বছর একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছে হাসান। তাদের পরিবার খুবই কষ্টের।