ভারত

ভয়ে ভূস্বর্গ ছাড়ছেন পরিযায়ীরা

মানবজমিন ডিজিটাল

২০২১-১০-১৯

থমথমে গোটা উপত্যকা। গত কয়েক দিনে কাশ্মীরে মোট ১১ জন সাধারণ মানুষকে মেরেছে জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন পরিযায়ী শ্রমিক। নির্বিবাদে এই হত্যালীলা তাঁদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছেন, তাঁরা অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। রাজ্য ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। সোমবার থেকেই জম্মুর উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। স্টেশনের বাইরে বসে রয়েছেন। অনেকেরই টিকিট কেনার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই। সঙ্গে নেই খাবার, নেই জল। ক্ষুধায় কাঁদছে শিশুরা। অনেকেই কাজ করতেন ইটের ভাটায়। সেখানকার মালিকরা বেতন মেটাননি বলে অভিযোগ। এ যেন আবার শুরু হচ্ছে লকডাউন। তবু পরিযায়ী শ্রমিকরা অনড়, কাশ্মীরে আর থাকবেন না। কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন , ‘‘আমরা প্রায় এক হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়েছি। তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ শুধু তাই নয়, যে সব এলাকায় জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে সেখানে নজরদারি অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তার পরেও মানুষের মন থেকে ভয় দূর হচ্ছে না। রোববার কুলগামে বিহারের দুই পরিযায়ী শ্রমিককে খুন করেছে জঙ্গিরা। শনিবার বিহারের এক ফুচকা বিক্রেতা এবং উত্তরপ্রদেশের এক ছুতোরকে খুন করেছে জঙ্গিরা। ফুচকা বিক্রেতার নাম অরবিন্দ কুমার শাহ। শ্রীনগরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি করা হয়েছে তাঁকে। উত্তরপ্রদেশের সাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় খুন করেছে জঙ্গিরা। খুন হয়েছেন কাশ্মীরি পণ্ডিত সংগঠনের বিশিষ্ট সদস্য এবং ব্যবসায়ী মাখনলাল বিন্দ্রু। এর পরেই বহু কাশ্মীরি পণ্ডিত কাশ্মীর ছেড়ে ফের চলে গিয়েছেন। মাথায় হাত কাশ্মীরের ব্যবসায়ীদের। গত ছ’বছর ধরে কাশ্মীরে রয়েছেন বিহারের বাসিন্দা ৩২ বছরের মোহাম্মদ সালাম। রোববারের ঘটনার পরে তিনিও বাড়ি ফিরতে চাইছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক খারাপ সময় দেখেছি, কিন্তু কোনও দিন আমাদের নিশানা করা হয়নি। এ বার ভয় লাগছে। এ ভাবে কত দিন বসে থাকব। আমরা নিজেদের বাড়ি ফিরতে চাই।’’একই সুর শোনা গিয়েছে, আর এক আইসক্রিম বিক্রেতা সতীশ কুমারের গলায়। তাঁর কথায়, ‘সবাই আতঙ্কিত। আগে রাস্তার ধারের হকারদের নিশানা করা হতো। এখন বাড়ি গিয়ে তাঁদের টার্গেট করা হচ্ছে। যদিও পুলিশ বলছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে তাতে ভরসা রাখতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিকরা।  প্রাণ বাঁচাতে তাই ভূস্বর্গ ছাড়ার হিড়িক পরে গেছে।

সূত্র : times of india
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status