কুমিল্লায় মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এটি কোনো ভবঘুরের কাজ হতে পারে না। চক্রান্তকারীরা পেছনে রয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করার দায়িত্ব সরকারের বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ইকবাল হোসেন নামে যাকে গ্রেপ্তার বা চিহ্নিত করা হয়েছে, তার নামের আগে একটা শব্দ জুড়ে দিলো। সেটা হলো ভবঘুরে। কখনো কখনো এমন যাদের ধরা হয়, তাদের কখনো বলে পাগল, না হলে বলে ভবঘুরে। এই ভবঘুরে কী করে পবিত্র কোরআন শরীফ চিনলো? গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের নিজ বাসভবনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এসব কথা বলেন রানা দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, যদি সে ভবঘুরে হয়ে থাকে, রাস্তার লোক হয়, তাহলে নতুন বই কোত্থেকে আনলো, কে দিলো? আর হনুমানের গদাটা এমনভাবে সরালো, যাতে হাতের কিছু না হয়, আবার সেখানে পবিত্র কোরআন শরীফ দিয়ে দিলো।
এটি কোনো ভবঘুরের কাজ হতে পারে না। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। চক্রান্তকারীরা পেছনে আছে। তাদের বের করে আনার দায়িত্ব রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সরকারকে নিতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে ক্ষোভ ও দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আমি এ কথাগুলো স্পষ্টভাবে বলেছি। মাঠে আমি যা বলেছি, সেগুলো উপমন্ত্রীকেও বলেছি। এই ক্ষোভ ও দূরত্ব যদি অব্যাহত থাকে, এটা কারও জন্য শুভ হবে না। দেশের জন্য তো নয়। অতএব করণীয় কী? রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল এবং সরকারকে আমি বলেছি, এটি পুনঃনির্ধারণ করা দরকার এবং আমাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, এই আলোচনাগুলো প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার জন্য আমি তাকে অনুরোধ করেছি। মাননীয় মন্ত্রীকে বলেছি, সর্বত্রই প্রশাসনের গাফিলতি আছে, রাজনৈতিক দলের গাফিলতি আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের পাশে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীকে দেখা যায়নি। সেখানে বলেছি, শুধু আমি যদি শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব পুলিশের ওপর ছেড়ে দেই, সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিরোধ করা এটা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি না তার হাতিয়ারের সঙ্গে জনগণ অবস্থান গ্রহণ না করে। এখন কীভাবে করবে, সেটা সরকার এবং রাজনৈতিক দলকেই নির্ধারণ করতে হবে।