গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পারিবারিক কলহ ও নেশার টাকা না দেয়ায় তিন শিশু সন্তানকে জোর করে বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে মাদকাসক্ত পিতা আলম শেখের (৪০) বিরুদ্ধে। গত ১০ই নভেম্বর রাতে উপজেলার খান্দারপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় সিয়াম শেখ (১০), হাসান শেখ (৩), হোসেন শেখ (৩)কে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শনিবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হোসেন (৩) মারা যায়। বাকি দুই শিশু এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেশার টাকা না দেয়া ও পারিবারিক কলহের জের ধরে মাদকাসক্ত আলম শেখ (৪০), স্ত্রী সীমা বেগমকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তিন সন্তানকে জোর করে কীটনাশক খাইয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাদের গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে মুকসুদপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেলে প্রেরণ করে। কিন্তু তাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় ফরিদপুর নিতে না পারায় স্থানীয়দের সহায়তায় তিনদিন পর ১৩ই নভেম্বর সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন শিশুকে ভর্তির পর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু হোসেন শেখ (৩) মারা যায়।
বাকি দুই শিশুর অবস্থাও খুবই আশঙ্কাজনক। তারা এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
শিশু তিনটির মা সীমা বেগম (৩০) জানান, তার স্বামী আলম শেখ মাদকাসক্ত। তার কাছে নেশার টাকা চাইলে না দেয়ায় তাকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে শিশু তিনটিকে আগাছানাশক কীটনাশক (বিষ) পানিতে মিশিয়ে জোর করে পান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। ফরিদপুর হাসপাতালে হোসেন নামে আমার এক সন্তান মারা যায়।
মুকসুদপুর থানার ওসি আবু বকর মিয়া জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এবং মাদকাসক্ত হওয়ায় নিজ ইচ্ছায় তিন সন্তানকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিষ পান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এর মধ্যে হোসেন (৩) নামে এক শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলে মাদকাসক্ত পিতা আলম শেখকে গ্রেপ্তার করে গোপালগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।