সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আজ প্রয়াণ দিবস। এক বছর আগে ঠিক আজকের দিনটিতেই দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে তিনি প্রয়াত হন। বঙ্গজীবনের অঙ্গ, বাঙালির সেরা আইকনের প্রয়াণে যে শূন্যতার শুরু হয়েছিল তা তো পূরণ হলো না আজও। সোমবার স্মরণে- শ্রদ্ধায় দিন কাটাবে মহানগরী কেন, দুই বাংলাই। কিন্তু আরও একজন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কি আর বাঙালি কোনোদিনও ফিরে পাবে? স্মৃতিচারণ করছিলেন সৌমিত্র কন্যা পৌলমী চট্টোপাধ্যায়। বাবা চলে যাওয়ার অল্প ক’দিনের মধ্যেই মা, বিশিষ্ট্ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় দীপা চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন পৌলমী। আক্ষরিক অর্থে অনাথ। কিন্তু স্মৃতি যে সতত সুখের।
তাই, পৌলমী বললেন- বাবা বরাবর তার জীবনের দুই ধ্রুবতারার কথা বলেছেন-রবীন্দ্রনাথ আর সত্যজিৎ রায়। বাবার মতোই দু’জনের দর্শন থেকে আমি জীবনের ইন্ধন নিই। তাই, শোক আমাকে স্পর্শ করে না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথকে আশ্রয় করেছিলেন জীবনে, আর সত্যজিৎ রায় ছিলেন তার কর্মগুরু। মনে পড়ছে টেলিভিশনের জন্য তার নেয়া তিনটি সাক্ষাৎকারের কথা। যেখানে তিনি বলেছিলেন, মৃত্যু অমোঘ, অনিবার্য, কিন্তু আমি মৃত্যুকে সমীহ করি একটিই কারণে - মৃত্যু মানে তো থমকে যাওয়া। আমি তো থেমে থাকতে চাই না। চাননি থেমে থাকতে। তাই দুরন্ত করোনাকালেও সব বাধা অতিক্রম করে শুটিং করেছেন। কাজ করতে করতেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপর বেলভিউ হাসপাতালে তার মৃত্যুর সঙ্গে সেই অকল্পনীয় যুদ্ধ। না, তার মৃত্যুতে বলা যাচ্ছে না - মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান...। তার একটি নাটকের নাম ছিল – নামজীবন। যিনি জীবনের সংকীর্তন গেয়ে গেছেন তার কি প্রয়াণ হয়? কিন্তু, জীবন বড় নির্মম। সোমবার কলকাতা কাটাবে সারাদিন পুলুর স্মরণে। নিকটজনের কাছে সৌমিত্র নন, ছিলেন ডাকনাম পুলু তে পরিচিত। পুলু জীবনের কাছে পরাজিত নন, তিনি ' অপরাজিত '।