নাটোরে দিনা খাতুন (১৯) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মুখে এসিড নিক্ষেপ করেছে বখাটেরা। এ ঘটনায় মুহিন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানার ওসি। গত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া বাজারে এই এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। দিনা খাতুন ডাঙ্গাপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে। সে চলতি বছর রাজশাহী সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
এসিড নিক্ষেপকারীদের মধ্যে একজনের নাম মুহিন। সে পার্শ্ববর্তী দত্তপড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। মুহিনের সহযোগীদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। মুহিন গ্রেপ্তারের পর সহযোগীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশের একাধিক টিম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরীক্ষার্থী দিনা খাতুন। তাকে প্রায়শই বিরক্ত করতো স্থানীয় বখাটে মুহিন ও তার সহযোগীরা। রোববার বিকালে দিনা বাড়ির অদূরে প্রাইভেট পড়ে ফেরার সময় বখাটে মুহিন তার দুই সহযোগীকে নিয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে দিনার পথরোধ করে। এ সময় দিনা দাঁড়ানো মাত্রই বোতলে থাকা এসিড নিক্ষেপ করে তার মুখমণ্ডল ঝলসে দেয় মুহিন। দিনা চিৎকার করলে স্থানীয়দের এগিয়ে আসতে দেখে তিন বখাটে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় । এ সময় স্থানীয়রা দিনাকে উদ্ধার করে বাড়ির লোকজনকে খবর দেয়। পরে পরিবারের লোকজন দিনাকে সরাসরি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে আটটায় দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
এদিকে ঘটনার পরপরই পার্শ্ববর্তী দত্তপড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মুহিনকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতেই মুহিনসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করে দিনার বাবা।
দিনার চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান জানান, দিনার অবস্থা তেমন ভালো না। সে চোখে দেখতে পারছে না, চোখের পরীক্ষা দিয়েছে রিপোর্ট পেলে বলা যাবে তার চোখের কী পরিস্থিতি।
এদিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি (তদন্ত) আবু সাদাত জানান, ঘটনার পর থেকে পুলিশ এসিড নিক্ষেপকারীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে। অন্যদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ভিকটিমের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। এসিড নিক্ষেপকারীদের ধরতে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।