করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নতুন করে লকডাউন দেয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে দেশে দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। সহিংস বিক্ষোভে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই শীতে নতুন করে করোনা ভাইরাসের কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করবে না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। করোনাভাইরাস সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অন্য উপায় অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।
এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সোমবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে করোনাভাইরাস বিষয়ক সমন্বয়ক জেফ জিয়েন্টস এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা সরাসরি লকডাউনের দিকে যাচ্ছি না।
করোনা মহামারী থেকে দূরে থাকার জন্য আমাদেরকে অন্যান্য ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভিত্তিতে টিকা নেয়া, বুস্টার ডোজ প্রয়োগ, শিশুদের টিকা দেয়া, থেরাপিউটিকস। তিনি আরো বলেন, আমাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়া ছাড়াও এই ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো আমরা।
তিনি আরো বলেছেন, শুক্রবার থেকে সব প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য করানো ভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ বৈধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রকরা। তখন থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষ এই বুস্টার ডোজ নিয়েছেন । তার ভাষায় শুক্র, শনি এবং রোববার এই তিন দিনে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ লাখ মানুষকে আমরা বুস্টার ডোজ প্রয়োগ করেছি। এর অর্থ হলো প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষকে দেয়া হয়েছে বুস্টার ডোজ। তাই দেরি করবেন না, আপনার বুষ্টার্ডস নিয়ে নিন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আসুন এই শীতে নিজেকে নিরাপদ রাখুন।
আলাদা এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন পসাকি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন করে কোনো লকডাউন দেয়ার সুপারিশ করছেন না অথবা করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিকে পঙ্গু করে এমন কোনও বিধিনিষেধের তারা সুপারিশ করছেন না।
অন্যদিকে নতুন করে করোনাভাইরাসের এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে ইউরোপ। সেখানকার অস্ট্রিয়াতে আরোপ করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন। কিন্তু নেদারল্যান্ডসে আংশিক লকডাউন এর প্রতিবাদে শহরে শহরে দেখা দিয়েছে দাঙ্গা। এর বাইরে অন্য দেশগুলোতে দেয়া হয়েছে করোনার বিধি-নিষেধ।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গত সপ্তাহের তুলনায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এক সপ্তাহে শতকরা ৮০ ভাগ। ফলে গত এক সপ্তাহে সেখানে গড়ে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৮০০ মানুষ- এক ব্রিফিংয়ে একথা বলেছেন ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন-এর পরিচালক রোচেলে ওয়ালেস্কি। ওদিকে প্রতিদিনে যুক্তরাষ্ট্রে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৬৬ ভাগ।
প্রতিদিন সেখানে গড়ে হাসপাতলে ভর্তি হচ্ছেন ৫৬০০ মানুষ। ওয়ালেস্কি বলেছেন, গড়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন ১০০০ মানুষ। তার তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কে মধ্যে প্রায় চার কোটি ৭০ লাখ এবং টিনএজারদের মধ্যে এক কোটি ২০লাখ মানুষ এখনো পূর্ণাঙ্গ টিকা নেননি। রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস এর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৮।