× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আবারো ৯ শতাংশ দাম হারালো তুরস্কের মুদ্রা লিরা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) নভেম্বর ২৩, ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:০২ অপরাহ্ন

দাম কমেই চলেছে তুরস্কের মুদ্রা লিরার। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান তার অর্থনৈতিক পরিকল্পনার পক্ষে সাফাই গেয়ে চলেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার আবারো ৯ শতাংশ দাম হারিয়েছে লিরা। বর্তমানে এক ডলার কিনতে প্রায় ১৩ লিরা খরচ করতে হচ্ছে। শুধুমাত্র এই বছরেই ৪০ শতাংশ দাম কমেছে তুরস্কের মুদ্রার। এরমধ্যে গত সপ্তাহ থেকে দাম কমেছে ২০ শতাংশ।
মূলত এরদোগানের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকেই তুরস্কের অর্থনীতির এই দুর্দশার জন্য দায়ি করা হয়। তার পরিকল্পনা না মানলে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে পদ থেকেও।
এভাবেই গত ২ বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪ জন গভর্নর পরিবর্তন করেছেন তিনি। কিন্তু দেশের অর্থনীতি দিনের পর দিন খারাপই হয়ে চলেছে। গত মাসে বরখাস্ত করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সেমিহ টুমেনকে। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তিনি বলছেন, তুরস্কের উচিৎ এমন নীতি গ্রহণ যাতে লিরার দাম অটুট থাকে। গত মার্চ মাসে তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানকে সরিয়ে দেয়া হয়। ওই ঘটনার পর লিরার দামের রেকর্ড পতন হয়েছিল। মার্চের পর এবারই লিরার দাম সবথেকে বেশি কমলো।
মুদ্রার দাম কমে যাওয়ায় ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তুরস্কের সাধারণ মানুষ। এক দিনের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের দাম দুইগুন হয়ে যাচ্ছে সেখানে। কান আকার নামের এক ব্যাক্তি জানান, এতো দ্রুত জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে যে আমি অনেক কিছু কেনা বাদ দিয়েছি। সামনে বিভিন্ন সফরের যে পরিকল্পনা আমি করেছিলাম তাও বাতিল করতে হয়েছে খরচ বৃদ্ধির কারণে। এর জন্য একমাত্র দায়ি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও তার একেপি সরকার। যারা এতদিন তাকে অন্ধের মতো সমর্থন দিয়ে এসেছেন তারাও এর জন্য দায়ি। গত বছর অক্টোবর মাসের তুলনায় তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ২০ শতাংশ। যদিও নিরপেক্ষ মুদ্রাস্ফীতি রিসার্চ গ্রুপের মতে, আগের তুলনায় মুদ্রস্ফীতি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। দেশটির নাগরিকরা বলছেন, আগে কখনো এই ধরনের অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি তাদের। ঘুম থেকে উঠেই দেখা গেলো সকল জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। গতকাল যে তেল ছিল ৪০ লিরা আজ তার দাম ৮০ লিরা!
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অর্থনীতি নিয়ে উদ্ভট চিন্তাই এর জন্য দায়ি। তুর্কি প্রেসিডেন্টের ধারণা, ঋণের ক্ষেত্রে সুদের পরিমাণ কম রাখলেই বুঝি অর্থনীতি ফুলেফেঁপে উঠবে। তার ধারণা, মুদ্রার দাম কম হওয়া মানে আর্থিক বৃদ্ধি সুনিশ্চিত হওয়া। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা মনে করেন উল্টোটা। তারা বলছেন, এমন নীতিই তুরস্ককে ডুবিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে জিনিসের দাম বাড়ছে। মুদ্রার মূল্য কমে যাওয়ায় আমদানি করতে অনেক বেশি অর্থ লাগছে। জ্বালানি তেল থেকে সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তাই হু হু করে বাড়ছে। তুরস্কের শিল্পও কাঁচামালের জন্য বিদেশের উপরই নির্ভর করে। তাই তাদেরও বেশি অর্থ খরচ করে তা আমদানি করতে হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ওজলেম ডেরিসি সেনগাল নিশ্চিত করেছেন যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপরে এত হস্তক্ষেপ করার ফলেই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৯ থেকে এর্দোয়ন রিজার্ভ ব্যাংকের চারজন গভর্নর নিয়োগ করেছেন। যারাই সুদের হার কম করার বিরোধিতা করেছেন, তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে সেখান থেকে। তুরস্কের মানুষ এখন বেঁচে থাকার জন্য সোনা বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাদের জমানো অর্থ ভাঙিয়ে খেতে হচ্ছে। ডলার বা ইউরো হাতে থাকলে তাও বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা। সম্প্রতি কিছু ছাত্র পার্কে রাতে শুয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাদের দাবি ছিল, বাড়ি ভাড়া এতটা বেড়েছে যে আর টানতে পারছেন না তারা। তাই এভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কিন্তু প্রতিবাদকারী ওই ছাত্রদের কাজকে 'সন্ত্রাসবাদ' বলে আখ্যা দিয়েছেন এরদোগান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে এক লিরা কিনতে খরচ করতে হতো বাংলাদেশি ৪০ টাকারও বেশি। মঙ্গলবার এক লিরা কিনতে খরচ হচ্ছে ৬ টাকার সামান্য বেশি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর