× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বে স্বৈরাচার বৃদ্ধিতে ঝড়ের মুখে গণতন্ত্র

শেষের পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
২৪ নভেম্বর ২০২১, বুধবার

বিশ্ব যখন অধিক থেকে অধিক পরিমাণে স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে, তখন প্রকৃতপক্ষে একটি ঝড়ের মুখে গণতন্ত্র। অনেক গণতান্ত্রিক দেশ ক্রমবর্ধমান হারে কর্তৃত্ববাদী কৌশল অবলম্বন করছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির সুযোগে তারা এই কর্তৃত্ববাদকে আরও জোরালো করছে। অন্যদিকে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তাদের ক্ষমতাকে আরও কুক্ষিগত করছে। এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের নিষ্পেষণ আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। তারা কর্তৃত্ববাদী অবস্থানের মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করেছে। দুর্বল করেছে আইনের শাসন। করোনা মহামারির অজুহাতে এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্টকহোম থেকে প্রকাশিত ‘দ্য গ্লোবাল স্টেট অব ডেমোক্রেসি রিপোর্ট ২০২১: বিল্ডিং রিসাইলেন্স ইন এ প্যান্ডেমিক এরা’ শীর্ষক রিপোর্টে এসব কথা বলেছে।
স্টকহোমভিত্তিক আন্তঃসরকার বিষয়ক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স (ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ) ২২শে নভেম্বর এই রিপোর্ট প্রকাশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ৯ থেকে ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সামিট ফর ডেমোক্রেসিতে যোগ দেবেন। গণতন্ত্র যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তা নিয়ে আলোচনা করতে এতে যোগ দেবে প্রায় ১০০ দেশ। সেই সম্মেলনের আগে প্রকাশ করা হলো এই রিপোর্ট । জাত্তা উরপিলায়েনেন বলেছেন, দা গ্লোবাল স্টেট অব ডেমোক্রেসি রিপোর্ট জেগে ওঠার কোনো আহ্বান নয়, এটা হলো একটা এলার্ম বেল। কর্তৃত্ববাদীরা বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে তাদের সুবিধা বিস্তার করছে। সর্বজনীন মূল্যবোধ- যেটা হচ্ছে সভ্যতার স্তম্ভ এবং তা সবচেয়ে বিপন্ন মানুষকে সুরক্ষা দেয়, সেই মূল্যবোধই রয়েছে হুমকির মুখে। এসব চ্যালেঞ্জের অনেকটাই শেয়ার করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু গণতন্ত্রের একটি একক এবং বিস্তৃত অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। আমাদের টিম ইউরোপ ডেমোক্রেসি (ইডি) ইনিশিয়েটিভ যেটা আজ আমরা উদ্বোধন করলাম, তার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং সদস্য দেশগুলোর গণতন্ত্রকে একসঙ্গে সমর্থন করে। আমরা এটাকে বিভক্ত হতে দেবো না। একদিকে এর থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করবো এবং অন্যদিকে অন্যদের থেকে আমরা শিক্ষা দান করব। আমাদের প্রয়োজন একশন ফর ডেমোক্রেসি। আসন্ন সামিট ফর ডেমোক্রেসিসহ বিভিন্ন ইভেন্টে নিজের দায়িত্ব পালন করবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
গত এক দশকে গণতন্ত্র থেকে বিচ্যুত হওয়া দেশের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এসব দেশে যেসব মানুষ বসবাস করেন তার সংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশ। যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশ হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং স্লোভেনিয়া। বর্তমান বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ বসবাস করেন এমন স্বৈরাচারীর অধীনে। গণতন্ত্র অথবা স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে গত দু’বছরে কমপক্ষে চারটি দেশ গণতন্ত্র হারিয়েছে। হতে পারে সেটি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন অথবা সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। দ্য স্টেট অব ডেমোক্রেসি সূচকে দেখা যাচ্ছে কর্তৃত্ববাদী শাসক গোষ্ঠী তাদের নিষ্পেষণকে বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে ২০২০ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। করোনা মহামারি গণতান্ত্রিক ক্ষতি গভীর থেকে গভীরতর করেছে। ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত শতকরা ৬৬ভাগ দেশ এমন সব পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে- যেটা বৈষম্যমূলক, অপ্রয়োজনীয় অথবা করোনা মহামারির সংক্রমণের ক্ষেত্রে বেআইনি। কিন্তু গণতান্ত্রিক এই ক্ষতি একমুখী নয়। অনেক গণতন্ত্রই স্থিতিস্থাপক প্রমাণ করেছে- বিশেষ করে করোনা মহামারির সময়। এ সময় তারা চালু করেছে অথবা বিস্তৃত করেছে গণতান্ত্রিক উদ্ভাবন, গ্রহণ করেছে বিভিন্ন রকম চর্চা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ’র সেক্রেটারি জেনারেল এসব কথা বলে আরও উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক এবং সামাজিক ব্যাধি প্রকাশিত হয়েছে করোনা মহামারির কারণে। যদি এই রিপোর্টে একটিও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়া হয়ে থাকে, তা হলো এখনই গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হবে। গণতন্ত্রকে বলিষ্ঠ করতে হবে। গণতন্ত্রকে উদ্ভাবনী করতে হবে এবং তার পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে করোনা মহামারির মধ্যে জটিল পরিস্থিতির ভেতরে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করেছে কিছু দেশ। তা সত্ত্বেও ভয়াবহ এবং হুমকি স্বরূপ ভুল তথ্য এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে। এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে এমন ভিত্তিহীন নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তোলা হয়েছে মিয়ানমার, পেরু এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ওই রিপোর্টে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলোতে কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে আফগানিস্তান, হংকং এবং মিয়ানমারের কথা। বলা হয়েছে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে আরো কিছু দেশে। তার মধ্যে রয়েছে ভারত, ফিলিপাইন এবং শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে অনেক দেশেই ক্রমবর্ধমান জাতিগত জাতীয়তাবাদ এবং রাজনীতিতে সামরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর