× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টিকাকরণ জোরদার ও স্বাস্থ্যবিধি মানলে করোনার বড় ঢেউ নাও আসতে পারে

প্রথম পাতা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২৪ নভেম্বর ২০২১, বুধবার

দেশে টিকাকরণ জোরদার করতে পারলে করোনা সংক্রমণের বড় ঢেউ পুনরায় আসার সম্ভাবনা কম। একই সঙ্গে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি পালন করার প্রতি জোর দিয়েছেন গবেষকরা। দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেশে করোনার সংক্রমণের বর্তমান ধারা জানুয়ারি পর্যন্ত উঠা-নামার মধ্যে থাকতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন। দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে চালিত গবেষণায় এসআইআর মডেলের মাধ্যমে তারা বলেছেন, দেশে করোনার সংক্রমণের যে গতি-প্রকৃতি তা জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পারে। করোনার টিকা দেয়ার আওতা বাড়াতে হবে।
অন্যদেশের ভ্যারিয়েন্ট পর্যায়ক্রমে আমাদের দেশে আসার কারণে চলতি বছরের জুন, জুলাই ও আগস্টে গোটা দেশ কাবু হয়েছিল। সংক্রমণের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে গ্রামগঞ্জেও। রেকর্ড সংখ্যক শনাক্ত ও মৃত্যু হয় করোনা রোগী।
সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত  দেশে করোনায় প্রায় ২৮ হাজার মানুষ মারা গেছেন। তবে উপসর্গ নিয়ে এর চেয়ে দ্বিগুণ বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে বেসরকারি হিসাব বলছে। যাদের তালিকা নেই সরকারি খাতায়। আর করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন পৌনে ১৬ লাখ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এ মুহূর্তে ৪২টি দেশের করোনার ভবিষ্যৎ গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড গ্লোবাল হেলথের অধ্যাপক লিসা হোয়াইট এই গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুলও গবেষণা করছেন। করোনার সংক্রমণের বর্তমান গতি-প্রকৃতি বিষয়ে জানতে চাইলে এই অধ্যাপক মানবজমিনকে বলেন, এখন যে করোনার সংক্রমণ ধারা চলছে, এটা এই মাস তো থাকবেই এবং আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত যেতে পারে। তাদের মডেলের মাধ্যমে সর্বশেষ অক্টোবরের শেষদিকে আগামী তিন মাসের অর্থাৎ জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ধারণা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনার যে বর্তমান গতি তা জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে। বর্তমানে করোনা স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। যেকোনো ভ্যাকসিন এ ধরনের রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই একটা পর্যায়ে ভাইরাসের নিম্নমুখী গতি চলে আসে।
ড. শাফিউন নাহিন শিমুল আরও বলেন, বাংলাদেশ  উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে করোনার দিক থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, শীতের সময় আমাদের এখানে আগের থেকেই কিছু ফ্লু বিদ্যমান রয়েছে। তাই তাদের গবেষণায় করোনার বর্তমান স্বাভাবিক ধারা ওঠানামার মধ্য দিয়ে যাবে। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমাদেরকে করোনার টিকার আওতা বাড়াতে হবে। এই কর্মসূচিকে আরও জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং সিমটোমেটিক ট্রিটমেন্ট চালাতে হবে। তাহলে দেশে পুনরায় বড় ধরনের করোনার ঢেউ নাও আসতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তারা এসআইআর মডেল ব্যবহার করে এই ধারণা দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
করোনার বর্তমান গতি-প্রকৃতি এবং ভবিষ্যতে বাড়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে দেশে জনস্বাস্থ্যবিদ, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং সংস্থাটির বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুস্তাক হোসেন মানবজমিনকে বলেন, দেশে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ কম আছে। এটা ভালো দিক। কিন্তু আমাদের এখানে শূন্য করলেও পৃথিবীতে এই ভাইরাস থাকলে যেকোনো সময় বাড়তে পারে। এই ভাইরাসকে পৃথিবীব্যাপী নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ বিশ্বের যেকোনো দেশে থাকলে আবার যেকোনো সময়ই তা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে বলেন,  আমাদের এখানে এখন যে করোনার রোগীগুলো শনাক্ত হচ্ছে তাদেরকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে। যাতে করে এই রোগীগুলো কারও সঙ্গে না মিশে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। টিকার আওতা বাড়তে হবে। বয়স্কদের টিকা দিতে হবে। তাহলে মৃত্যুর হার কমে যাবে। ডা. মুস্তাক হোসেন আরও বলেন, এখন করোনা কমছে বা কম আছে। তাই বলে আমাদেরকে করোনার কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাই স্বাস্থ্যবিধি ভালোভাবে পালন করতে হবে। তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বন্ধ ঘরে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুইতে হবে। মাস্ক পরার পরামর্শ দেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর