× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মিট দ্য প্রেস-এ সালমান এফ রহমান / আগামী বছর থেকে দেশেই টিকা উৎপাদন করতে পারবো

প্রথম পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৪ নভেম্বর ২০২১, বুধবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, আগামী বছর থেকে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদন শুরু করা যাবে। বেসরকারিভাবে বেক্সিমকোসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি টিকা উৎপাদন নিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে আন্তরিক। তিনিও চান দেশে টিকা উৎপাদন হোক। এজন্য যে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সরাসরি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সালমান এফ রহমান। অনুষ্ঠানে অর্থনীতি, পরিবহন, করোনার টিকা আমদানি ও উৎপাদন, স্বাস্থ্য খাত, দেশের শেয়ারবাজার ও ব্যাংক খাত নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ’র সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।
টিকা উৎপাদন বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, বেসরকারি ওষুধ উৎপাদন কোম্পানি ইনসেপ্টা চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছে।
চীন যে বিশেষ ধরনের টিকা তৈরি করে সেটি ইনসেপ্টার বানানোর সক্ষমতা আছে। তাদের সঙ্গে চীনের টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন চূড়ান্ত হলেই টিকা উৎপাদন শুরু করতে পারবে। পাশাপাশি বেক্সিমকোও টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করেছে। আশা করি আগামী ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে বেক্সিমকোও টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম শেষ করতে পারবে। তারপরও আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছি। বেসরকারিভাবে ইনসেপ্টা ও বেক্সিমকো কাজ করলেও আরও কয়েকটি কোম্পানি টিকা উৎপাদন নিয়ে কাজ করছে।
সালমান এফ রহমান বলেন, সাধারণত করোনা মহামারির অবস্থায় আগামী এক থেকে দুই বছর টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। টিকা দেয়ার পরও এখনো করোনা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। ফলে আলোচনায় আসছে বুস্টার টিকা দেয়ার। সে বিষয়টিও আলোচনায় আছে। তিনি বলেন, ভারত থেকে আমরা সর্বপ্রথম সবচেয়ে কম দামে ভ্যাকসিন আমদানি করেছি। বেক্সিমকো যখন করোনার টিকা আমদানির চুক্তি করে, তখন ওই টিকা অনুমোদনও পায়নি। প্রধানমন্ত্রী বললেন- অগ্রিম বুকিং দিতে। তাই আমরা টাকা দিয়ে বুকিং করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী উদ্যোগের ফলে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে আমরা দ্রুত ভ্যাকসিন পেয়েছি। যখন আমরা টিকা পাই, তখন কানাডা, আমেরিকা ও ইউরোপেও টিকা দেয়া শুরু হয়নি। আগামী মাসে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি আছে সেটির আরেকটি চালান পাওয়া যাবে। আর আগামী বছর চুক্তির সব ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশা করি।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জ্বালানি তেলের দামের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন। তবে আমার মনে হয় এটি কমে আসবে। দাম কমে আগের পর্যায়ে না গেলেও এটি কমবে। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে যে পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে তা কিন্তু নয়। বরং শিপিংয়ের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। শিপিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কন্টেনারের পরিবহনেও খরচ অনেক বেড়েছে। সালমান এফ রহমান মনে করেন, বিশ্ব পরিস্থিতির বিবেচনায় বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমে আসলে আস্তে আস্তে দেশেও এর প্রভাব পড়বে।
পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বললেই চলে। এখানে যে লেনদেন হয় তার ৮০ শতাংশ আসে রিটেল বা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। বাকি ২০ শতাংশ আসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। অর্থাৎ উন্নত বিশ্বের পুঁজিবাজারের চিত্র পুরো উল্টো বাংলাদেশে। আমাদের পুঁজিবাজার ইক্যুইটিভিত্তিক। এখানে বন্ড মার্কেট নেই। বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। বর্তমান চেয়ারম্যান ও কমিশনারও এ বিষয়ে আন্তরিক। আশা করা যায়, বন্ড মার্কেট জনপ্রিয় হলে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের ব্যাংক সেক্টরে ঋণখেলাপি আছে। সমস্যা হলো- আমরা শর্টটার্ম ডিপোজিট ব্যবহার করে লংটার্ম লোন দিচ্ছি। এটা মিস ম্যাচ। এই মিস ম্যাচের কারণেও সমস্যা হচ্ছে না। কারণ আমাদের অর্থনীতি গ্রো করছে। তিনি বলেন, ঋণখেলাপি বেসরকারি ব্যাংকে কম। সরকারিতে আছে কিছু। এটা সব দেশেই আছে। প্রভিশনিং ও ক্যাপিটাল থাকলে সমস্যা না। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ক্যাপিটাল ছোট এমন অনেক ব্যাংক আছে। এ কারণে ভবিষ্যতে আমাদের এই ব্যাংকগুলোকে মার্জ করতে হবে। এগুলো মার্জ করে বড় ক্যাপিটালের ব্যাংক করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন এমন আইন করছে। এমন আইন না থাকলে সামাজিক মাধ্যম বড় ক্ষতি করতে পারে। তাই সমাজকে সুরক্ষা দিতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সাংবাদিকদের ওপর এই আইনের অপব্যবহার করলে তা সমর্থন করি না।
আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ঢাকার ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট সম্পন্ন হলে ঢাকার পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিনিয়োগ বিষয়ে উপদেষ্টা মনে করেন, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই নয়, দেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। নতুন নতুন ট্যাক্স গ্রাহক বা ট্যাক্সের আওতা বাড়াতেও তিনি পরামর্শ দেন।
ছাপা পত্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, চলতি বছরেই ‘দি ইনডিপেনডেন্ট’ পত্রিকা নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এটা ছাপা ও অনলাইনে থাকবে, না শুধু অনলাইন চলবে। এই পত্রিকার সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িত। আবার বিভিন্ন পক্ষ এমনকি তথ্যমন্ত্রীও চান না?, পত্রিকাটির ছাপা বন্ধ হয়ে যাক। এই পত্রিকা দেশের প্রথম ১৬ পাতার ছাপা রঙিন পত্রিকা। একটা পত্রিকা চালু রাখতে আর্থিক সক্ষমতার দিকটিও দেখতে হয়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগে সকালের খবরের কাগজ না পড়া পর্যন্ত সেই খবরটি ছড়িয়ে পড়তো না। যদি কেউ সকাল ৯টার খবর মিস করতো, তাহলে সেই খবরটি আর দেখতে পেতো না। কিন্তু অনলাইনে সেই সুযোগটি আছে। সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার পর থেকে সাংবাদিকদের এখন দায়িত্বটা বেড়ে গেছে।
অতিথি হিসেবে ক্রেস্ট ও ফুল না দিয়ে একটি সার্টিফিকেট বাঁধাই করে দেয়ার আহ্বান জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি প্রচলনটা শুরু করেছি। বিষয়টি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নতুন নেতাদের বলেছি। এখন আপনাদেরও বলছি। আমাকে অতিথি হিসেবে যে ফুল ও ক্রেস্ট দিচ্ছেন, সেটি না দিয়ে এ টাকাটা একটা চ্যারিটি ফান্ডে দিন। আমাকে এটা জানিয়ে দেবেন। আর কম টাকায় একটা সার্টিফিকেট বাঁধাই করে আমাকে দেবেন, আমি সেটা দেয়ালে টাঙিয়ে রাখবো।
সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে ন্যাশনাল হেলথ ইনস্যুরেন্স আছে, ওটা দেশে বাস্তবায়ন করা যায় কিনা এ নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটা একটু কঠিন। কারণ আমরা তো সবাই ট্যাক্স দেই না। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় এটি বাস্তবায়নে কাজ করছি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর